মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: মরশুমের দ্বিতীয় ডার্বি (Derby Match)। এর আগে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান (East Bengal vs Mohun Bagan) মুখোমুখি হয়েছিল ডুরান্ড কাপে। জিতেছিল মোহনবাগান। এবার কে জিতবে? সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র।
কে জিতবে, সেই তর্কে ঢুকব না। এবারের আইএসএলে (ISL) দু’টো দলের শুরুটাই ভাল হয়নি। হারের ধাক্কা সামলে যেমন মোহনবাগান শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তেমনি জয়ের ছন্দ খুঁজে পেয়েছে ইস্টবেঙ্গলও।
তবে ডুরান্ডের ডার্বির পরিস্থিতির সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির অনেকটাই তফাত। ডুরান্ডের ডার্বির যখন হয়েছিল তখন ইস্টবেঙ্গল তৈরি ছিল না। বিদেশি ফুটবলাররা সবে এসেছিল। বাকি যারা ছিল তাদের সঙ্গে বোঝাপড়াও দারুণ গড়ে ওঠেনি।
এখন কিন্তু ইস্টবেঙ্গল টিমটা অনেকটাই তৈরি। আইএসএলে প্রথম দু’টো ম্যাচে হারলেও দলটার খেলায় সামান্য হলেও উন্নতি নজরে পড়েছিল। সেটা আরও বেশি করে দেখা গিয়েছে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ম্যাচে। বাকি দুই ম্যাচের তুলনায় ওই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স অনেক বেশি আশাব্যঞ্জক। যেটা দেখে নিঃসন্দেহে বলা যায়, ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। তবে ডিফেন্স চিন্তায় রাখবে লাল-হলুদকে। বিশেষ করে ডিপ ডিফেন্স।
এই ডিপ ডিফেন্সের ভুলেই কেরালা, গোয়া ম্যাচে ভরাডুবি ঘটেছিল। ডেড বল সিচুয়েশনে গোল হজম করেছিল ইস্টবেঙ্গল। আমার বিশ্বাস, কোচ স্টিফেনের সেই ত্রুটিগুলো চোখ এড়ায়নি। ডার্বির আগে যেসময় তিনি পেয়েছেন, আশা করি সেই ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করবে। একটু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘কমপ্যাক্ট ফুটবল’ যদি ইস্টবেঙ্গল খেলতে পারে, তাহলে ভালকিছুর আশা করতেই পারেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।
একই কথা মোহনবাগানের ক্ষেত্রেও খাটে। ধারেভারে ও শক্তিতে মোহনবাগান বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকলেও দলটার কাছ থেকে যে পারফরম্যান্স সমর্থকরা প্রত্যাশা করছেন, সেটা হয়তো এখনও পাওয়া যায়নি। সেটার পিছনে বোঝাপড়ার অভাবটা যেমন একটা কারণ, তেমনি আরও একটা কারণ হল ডিফেন্সে গলদ। ভুলে গেলে চলবে না, শেষ ম্যাচটা মোহনবাগান বড় ব্যবধানে জিতলেও দু’গোল হজম করেছে। ইস্টবেঙ্গলের অ্যাটাকাররা কিন্তু গোলের মধ্যে রয়েছে। ক্লেইটন সিলভা গোল পাচ্ছে, মাঝমাঠের ফুটবলাররাও গোল করেছে। এটা ভাল দিক। তবে মোহনবাগানের সবচেয়ে অ্যাডভান্টেজ, তাদের শক্তিশালী মাঝমাঠ ও অ্যাটাক লাইন।
রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস চলে যাওয়ার পর এই দলটায় একটা ‘নাম্বার নাইন’, যে কিনা গোল করবে, এমন একজনের অভাব চোখে পড়ছিল। দিমিত্রি পেত্রাতোস কিন্তু সেই অভাবটা কেরালা ম্যাচে পুষিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, মোহনবাগানে কোয়ালিটি প্লেয়ার অনেক বেশি। তারা ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন। পাশাপাশি সেট টিমটাই ওরা ধরে রেখেছে। ফলে অনেক বেশি পরিকল্পনামাফিক ফুটবল জুয়ান ফেরান্দোর দলের কাছ থেকে প্রত্যাশিত।
যেহেতু লিগের শুরু, তাই হয়তো ওপেন অ্যাটাকে যাবে না কোনও দলই। ডিফেন্স সংগঠন ঠিক রেখে চেষ্টা করবে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল তুলে নিতে। তবে দুর্দান্ত একটা ম্যাচ দেখতে পাব, সেই আশা নিয়েই চোখ রাখব ডার্বিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.