সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালে গালোয়ান উপত্যকায় লালফৌজের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় সমস্যাটা নজরে এসেছিল সেনাবাহিনীর। দেখা যায়, ডিআরডিও-র তৈরি ‘অর্জুন’, রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়) ওজনে ভারী হওয়ায় লাদাখের পাহাড়ি অঞ্চলে এই ট্যাঙ্কগুলিকে বেশ বেগ পেতে হয়। এই অবস্থায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থার উপর দায়িত্ব আসে তুলনায় হালকা কোনও ট্যাঙ্ক তৈরির। সেই মতোই এবার ভারতীয় সেনার হাতে আসতে চলেছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি লাদাখের শীতল মরুভূমিতে যুদ্ধের উপযুক্ত হালকা ট্যাঙ্ক জোরাওয়ার। ২০২৭ সালে এই মারণ ট্যাঙ্ক সেনাবাহিনীর হাতে আসবে বলে জানিয়ে দিলেন ডিআরডিও প্রধান সমীর কামাথ।
কী বিশেষত্ব অত্যাধুনিক জোরাওয়ার ট্যাঙ্কের? অত্যন্ত ভারি ওজন হওয়ার কারণে ভারতীয় সেনার রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়)-এর মতো ট্যাঙ্কগুলি লাদাখের মতো উচ্চ পাহাড়ি অঞ্চলে যথেষ্ট সমস্যাদায়ক। সে কথা মাথায় রেখেই দাবি ওঠে হালকা ও সাবলিল কোনও ট্যাঙ্কের। গত বছরের মার্চ মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দেশীয় প্রযুক্তিতে হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিল। শুরু হয় প্রস্তুতি। তবে বছর ঘোরার আগেই সেই প্রকল্পে সাফল্য পেয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। জানা যাচ্ছে অত্যাধুনিক এই জোরাওয়ার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে যাতায়াতে অত্যন্ত সাবলীল। নদী বা যে কোনওরকম বাধা পার হতে কোনও সমস্যা হবে না তাঁর। এ প্রসঙ্গে ডিআরডিও প্রধান বলেন, এই ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। ডিআরডিও এবং এলএনডিটি যৌথভাবে এটি তৈরির কাজ শুরু করেছে। সব রকম পরীক্ষা সফল হওয়ার পর আশা করছি ২০২৭ সালে এটি ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে।
এ প্রসঙ্গে ডিআরডিও-র নির্দেশক রাজেশ কুমার বলেন, ‘সাধারণত তিন ধরনের ট্যাঙ্ক রয়েছে। ওজনের নিরিখে এই তিন ধরনের ট্যাঙ্ক হল ভারী ট্যাঙ্ক, মধ্যম ওজনের ট্যাঙ্ক ও হালকা ট্যাঙ্ক। প্রতিটি ট্যাঙ্কের নিজস্ব ভূমিকা রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। এর মধ্যে আত্মরক্ষা, আক্রমণ দুই ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদাভাবে ব্যবহার করা হয় ট্যাঙ্কগুলি। তবে এই হাল্কা ওজনের ট্যাঙ্ক দুই ক্ষেত্রেই কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে। ইতিমধ্যেই এই ট্যাঙ্কের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। শনিবার গুজরাটে গিয়ে ট্যাঙ্ক প্রজেক্টের সমীক্ষাও করেন ডিআরডিও প্রধান। আগামী ৬ মাসের মধ্যেই শুরু হবে নয়া এই ট্যাঙ্কের ট্রায়াল।
এ প্রসঙ্গে ডিআরডিও-র নির্দেশক রাজেশ কুমার বলেন, বিশ্বের একাধিক দেশ বর্তমানে হালকা ট্যাঙ্কের উপর কাজ শুরু করেছে। যেখানে পশ্চিমী দেশের পাশাপাশি রয়েছে রাশিয়া, চিনও। তবে ভারতীয় ট্যাঙ্ক জোরাওয়ার বিশেষত্ব হল, ট্যাঙ্কের মূল মাপকাঠিগুলিকে অভিন্ন রেখেই আমরা এই ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু করেছি। যেমন আগুন, ক্ষমতা, ক্ষিপ্রতা ও আত্মরক্ষার মতো সব বিষয়গুলি এর মধ্যে রয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই এই ট্যাঙ্কের ওজন হতে চলেছে অত্যন্ত হালকা। ফলে সর্বগুণ বজায় রেখেই পাহাড়ি ক্ষেত্রে যুদ্ধের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে ট্যাঙ্কটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.