সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংরক্ষণের দাবিতে উত্তাল মহারাষ্ট্রে ফের আত্মঘাতী এক বিক্ষোভকারী। আত্মঘাতী বিক্ষোভকারীর নাম প্রমোদ জয়সিং হোর। সংরক্ষণের দাবি ফলপ্রসূ হবে। ফেসবুকে এই পোস্ট করেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন প্রমোদ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুর আত্মহননের সিদ্ধান্ত জানতে পেরে পালটা কমেন্টে করে বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করেন বন্ধুরা। তবে ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন ওই মারাঠি যুবক।
মৃত্যুর আগে প্রমোদ লেখেন, ‘আজ একজন মারাঠি চলে যাচ্ছে। তবে সংরক্ষণের দাবি যেন থেমে না যায়।’ সংরক্ষণের সমর্থনে প্রমোদ যে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন তা রবিবারই একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ করে ছড়িয়ে দেন। এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার মহারাষ্ট্রের মুকুন্দওয়াড়ি স্টেশনে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন ওই যুবক। ঝাঁপ দেওয়ার আগে ফেসবুকে রেলট্র্যাকের ছবিও পোস্ট করেন প্রমোদ। সোমবার সকালে তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে আত্মহননের খবর শুনে ভিড় জমে যায় যুবকের বাড়িতে। পরিবারের লোকজনও ততক্ষণে প্রমোদের আত্মহননের খবর পেয়েছেন। তবে সংরক্ষণের প্রত্যাশী গোটা পরিবার দেহ নিতে অস্বীকার করেছে। সদস্যদের সাফ দাবি, সংরক্ষণ নিয়ে সরকার কী ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আগে জানাক, তারপরেই প্রমোদের দেহ পৌঁছাবে তাঁর বাড়িতে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি তুলে বিক্ষোভে নেমেছে গোটা মহারাষ্ট্র। এনিয়ে গত এক সপ্তাহে সংরক্ষণের দাবিতে তিন জন বিক্ষোভকারী আত্মঘাতী হয়েছেন। বলা বাহুল্য, সংরক্ষণের সমর্থনে শুরু থেকেই হিংসাত্মক বিক্ষোভের পথে যায়নি মারাঠারা। প্রথম দিকে সংরক্ষণের সমর্থনে মৌন মিছিল করে নিজেদের দাবি দাওয়া পেশ করেছে সরকারের কাছে। তবে সরকার এহেন মিছিলকে পাত্তা না দিতেই তা বিক্ষোভের চেহারা নেয়। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নতুনভাবে বিক্ষোভ শুরু করেছে আন্দোলনকারীরা৷ এক কথায় জ্বলছে গোটা মহারাষ্ট্র। পুণে থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাণিজ্যিক এলাকা ছাকান সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে খবর৷ সোমবার সকাল থেকে সেখানে চলছে বনধ৷ আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় ২৫টি বাসে৷ এমনকী এও খবর, যে কয়েকটি দোকান খোলা হয়, সেগুলিকেও বলপূর্বক বন্ধ করে দেয় উত্তেজিত জনতা৷ পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় খণ্ডযুদ্ধও শুরু হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে পাথর৷ ফলে এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেমেছে ব়্যাফ, পুলিশ ও কুইক রেসপন্স টিম৷ রাজ্য প্রশাসনের বিরদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন মারাঠা সম্প্রদায়েদের লোকেরা৷ তার জেরেই ডাকা হয়েছে বনধ। বনধের জেরে বন্ধ স্কুল ও কলেজ৷ স্তব্ধ মুম্বইয়ের লাইফ লাইনও৷ মুম্বইয়ে রেল অবরোধ করে চলছে বিক্ষোভ৷ দূরপাল্লার ট্রেনও থমকে রয়েছে৷ রেল অবরোধের পাশাপাশি জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা৷ শিবসেনা সাংসদ চন্দ্রকান্ত খাইরে ও কংগ্রেস নেতা সুভাষ জাম্বাসের উপরও চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.