ফাইল ছবি।
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সংঘ পরিচালনায় মহিলারা! প্রতিষ্ঠার শতবর্ষে সংঘ পরিচালনায় বাড়ছে মহিলাদের গুরুত্ব। এবার মহিলারাও সক্রিয়ভাবে পরিচালনা করতে পারবেন সংঘের বিভিন্ন শাখা। রবিবার এমনই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)। হরিয়ানার পানিপথে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সর্বভারতীয় প্রতিনিধি বৈঠক। চলবে ১৪ মার্চ পর্যন্ত।
এদিনের বৈঠকে সংঘ পরিচালনায় মহিলাদের গুরুত্ব বাড়ানোর কথা স্বীকার করেছেন আরএসএসের সরকার্যবাহ মনমোহন বৈদ্য। তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শাখায় মহিলাদের (Women) সক্রিয়তা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কোনও হিন্দুত্ববাদী নেতা নন। বরং প্রবলভাবে সংঘের সমালোচক বলে পরিচিত প্রয়াত মুলায়ম সিং যাদবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সর্বভারতীয় প্রতিনিধি বৈঠকের সূচনা করা হয়।
দু’বছর বাদে, ২০২৫ সালে ১০০ বছর পূর্ণ হবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসের। এত বছর সংগঠন পরিচালনায় মহিলাদের ভূমিকা কার্যত অস্বীকার করা হতো। মূলত পুরুষতন্ত্রই চলত আরএসএস পরিচালনায়। সংগঠন পরিচালনার শীর্ষে কোনও মহিলার স্থান পাওয়া ছিল কার্যত কল্পনাতীত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংগঠন বিস্তারে মহিলাদের গুরুত্ব বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছে সংঘের একাংশ। সেই দাবিকেই মান্যতা দিতে চলেছে সংঘ পরিবার। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মহিলা শাখা চলে ‘রাষ্ট্র সেবিকা সমিতি’র (Rashtra Sevika Samiti) নামে। এদিন আরএসএসের সরকার্যবাহ মনমোহন বৈদ্য জানান, সমাজের জাগরণ এবং পরিবর্তনের জন্য মহিলাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংঘে আরও বেশি করে মহিলাদের কীভাবে অংশগ্রহণ করানো যায়, তা এই বৈঠকে আলোচিত হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ২০২৫ সালে শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচি নিচ্ছে আরএসএস। ৩০০০ বাছাই করা স্বয়ংসেবক নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ‘শতাব্দী বর্ষ বিস্তারক’। যারা দেশের প্রতিটি প্রান্তে বছরভর সংঘের ভাবনা এবং আদর্শের প্রচার চালানোর দায়িত্ব পালন করবে। ইতিমধ্যে এই পরিকল্পনায় ১৩০০ স্বয়ং সেবককে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আরও ১৫০০ স্বয়ং সেবককে খুব শীঘ্রই বেছে নেওয়া হবে বলে সংঘের তরফে জানানো হয়েছে। দৈনিক শাখার সংখ্যা ১ লক্ষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে সঙ্ঘ।
গত পাঁচ বছরে ৭ লক্ষের বেশি যুবক সংঘের সঙ্গে জুড়েছেন। সংঘ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগ যুবক-যুবতী। এঁদের গড় বয়স ২০-২৫ বলে সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়। এদিনের বৈঠকের শুরুতে সংঘের সরকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসাবলে গত ১ বছরে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিশিষ্টজনরা প্রয়াত হয়েছেন, তাঁদের নাম উল্লেখ করে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে শোকপ্রস্তাবের প্রথম নামই ছিল সংঘের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিং যাদব ও আরজেডি নেতা শরদ যাদবের। এছাড়াও আইনজীবী শান্তিভূষণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেনকেও স্মরণ করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.