সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পা নয়৷ কোথাও যেতে চাইলে ভরসা হুইলচেয়ার৷ নাকে বাঁধা অক্সিজেনের নল৷ এভাবে জীবন কাটানোই যেন দায় হয়ে ওঠে অনেকের কাছে৷ কিন্তু কেরলের তরুণী লথিশা আনসারি এক্কেবারে অন্যরকম৷ লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও প্রতিবন্ধকতাই যেন তাঁর কাছে বড় কিছু নয়৷ তাই তো শারীরিক অসুস্থতাকে তুচ্ছ প্রমাণিত করেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসলেন তিনি৷
কেরলের কোট্টায়ামের এরুমেলি এলাকার বাসিন্দা লথিশা আনসারি। টাইপ টু অস্টিওজেনেসিস ইমপারফেক্ট রোগে আক্রান্ত বছর চব্বিশের তরুণী৷ জন্ম থেকেই এই কঠিন রোগ বাসা বেঁধে রয়েছে লথিশার শরীরে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই বিরল রোগে আক্রান্ত রোগীদের শরীরের হাড় ভঙ্গুর হতে থাকে। ফুসফুসে রক্তচাপের পরিমাণও অনেকটা বাড়তে থাকে। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য তাঁদের সবসময়েই অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। লথিশার উচ্চতা মাত্র দু’ফুট৷ ওজন মাত্র ১৪ কেজি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলেই তো আর কেউ স্বপ্ন দেখা বিসর্জন দিতে পারেন না৷ তাই তো ছোট্টবেলা থেকে লথিশা স্বপ্ন দেখেছেন, তিনি উচ্চশিক্ষার পর নিজের পায়ে দাঁড়াবেন৷ আইএএস হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনও আধিকারিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন৷
তবে লথিশা স্বপ্ন দেখতেন ঠিকই৷ এ-ও জানতেন, স্বপ্নপূরণের রাস্তাটা মোটেও মসৃণ নয়৷ কারণ, দুরারোগ্য অসুখ গ্রাস করে রয়েছে তাঁকে। যার জেরে নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না তিনি৷ হুইলচেয়ারই সবচেয়ে কাছের বন্ধু তাঁর৷ তাই মন ভাঙলেও, স্বপ্ন ভাঙতে দেননি৷ এই বছরে হুইলচেয়ারে বসেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসলেন তিনি। শুধু হুইলচেয়ারই নয়, পরীক্ষার হলে অক্সিজেন সিলিন্ডারও নিয়ে যান লখিশা। এমনকী, পরীক্ষা দিতে দিতেও অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাঁর৷ ওই পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডারটি তাঁকে দিয়েছেন কোট্টায়াম জেলার কালেক্টর৷ দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানোর জন্য কালেক্টরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন লখিশার বাবা-মা৷এখন অপেক্ষা একটাই, পরীক্ষায় উতরে স্বপ্ন সফল করা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.