ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা মানে তো নিরাপদ-নিশ্চিন্ত আশ্রয়। বিপদের মুখে নিজের প্রাণ দিয়েও সন্তানকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যান মা। কিন্তু চিরাচরিত এই মাতৃত্বের ধারণায় ব্যতিক্রমও ঘটে। যেমনটা ঘটে গেল গুজরাটে (Gujarat)। জন্ম থেকে মেয়ে অসুস্থ বলে হাসপাতালের চারতলা থেকে মেয়েকে ছুঁড়ে খুনের অভিযোগ উঠল মায়েরই বিরুদ্ধে! আহমেদাবাদের (Ahmedabad) একটি হাসপাতালে এমন শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৩ বছরের তরুণীকে।
গুজরাটের আনন্দ জেলার বাসিন্দা ফারজানাবানু মালেক। মাস তিনেক আগে তিনি কন্যাসন্তানের (Girl child) জন্ম দেন। তখন থেকেই অসুস্থ সেই শিশু। প্রথমদিকে তার বাবা আসিফ অভিযোগ তুলেছিলেন, মেয়েকে বিষাক্ত জল (Contaminated water) খাইয়ে অসুস্থ করে তোলা হয়েছে। তার সত্যতা কতটা, জানা নেই। তবে মেয়ে ক্রমশই অসুস্থ হতে থাকে। ভাদোদরার এসএসজি হাসপাতালে তাকে ভরতি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন আরও উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে তাকে আহমেদাবাদের সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন।
সপ্তাহ দুই আগে আহমেদাবাদের হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় এই শিশুর। এরপর রবিবার তার মা ফারজানাবানু অভিযোগ তোলেন, মেয়ে হাসপাতাল থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। শোরগোল পড়ে যায়। তারপর সামান্য খোঁজাখুঁজি আর সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage) পরীক্ষা করা হতেই সত্যি প্রকাশ্যে আসে। দেখা যায়, হাসপাতালের একতলায় এক শিশুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, তাকে উপর থেকে ছুঁড়ে খুন করা হয়েছে। হাসপাতালের তরফে খবর পাঠানো হয় শাহিবাগ থানায়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ASP) এসে জেরা করতেই ভেঙে পড়ে ফারজানাবানু। প্রথমদিকে ‘বাচ্চা চুরি’র তত্ত্বে অনড় থাকলেও পরে মেয়েকে ছুঁড়ে ফেলার কথা জানায় সে। তবে যুক্তি হিসেবে বলে, মেয়ে জন্ম থেকেই এত রুগ্ন, এত কষ্ট পাচ্ছে যে তার কষ্ট মা হয়ে সহ্য করতে পারছিল না ফারজানাবানু। তাই মেয়ের জীবন শেষ করে দিয়েছে। তবে তার এসব কথায় কর্ণপাত করতে রাজি নয় পুলিশ। সন্তান খুনের অভিযোগে সরাসরি গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। আইন মোতাবেক ফারজানাবানুর শাস্তি যা হওয়ার তো হবেই। তবে তারও আগে সে ‘মা’ হিসেবে যে পরিচয় রাখল, তা নিঃসন্দেহে লজ্জার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.