সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেই নতুন ভারত গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এনডিএ! বিরোধীরা এই উদ্যোগকে গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা বলে অভিযোগ তুলেছে। তারপরও নিজেদের লক্ষ্য থেকে চোখ সরাচ্ছে না শাসকদল। সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন শেষ হতে এখনও তিনদিন বাকি। কিন্তু, তার আগে সংসদের দুটি কক্ষে ইতিমধ্যে ৩০টি বিল পাস করিয়ে ফেলেছে সরকার। যার ভিতরে এনআইএ(সংশোধনী), জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিল যেমন রয়েছে। তেমনি রয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক, আরটিআই এবং ইউএপিএ বিলও। যার মধ্যে তিন তালাক এবং ইউএপিএ বিল নিয়ে সব থেকে বেশি বিতর্ক হয়েছে সংসদে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ভারতের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী কন্ঠ রুদ্ধ করতে চাইছে বলেও দাবি করেছে। তবে তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ করেছে না সরকারপক্ষ। তাই ১৯৫২ সালে তৈরি হওয়া প্রথম লোকসভার সর্বপ্রথম অধিবেশনে যেখানে ৬৪ দিনে ২৭টি বিল পাস হয়েছিল, সেখানে এবার ৪৬ দিনে পাস হয়েছে ৩০টি বিল।
বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করলেও লোকসভার উপর দেশবাসীর আস্থা ফিরিয়ে আনতে এই তৎপরতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন স্পিকার ওম বিড়লা। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জনগণকে অবশ্যই জানতে হবে সংসদ সক্রিয় রয়েছে, আর কাজ হচ্ছে। দেশের যে মানুষরা আমাদের থেকে অনেক কিছু আশা করেন তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।” স্পিকার যে কথামতোই কাজ করছেন শাসকদলের সাংসদদের পাশাপাশি তা স্বীকার করছেন বিরোধীরাও। মোদির মন্ত্রিসভার এক প্রবীণ মন্ত্রী বলেন, “সাম্প্রতিক অতীতে আইনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করা এই ধরনের সক্রিয় স্পিকারকে লোকসভায় দেখেনি আমরা। সংসদের অধিবেশন চলাকালীন প্রত্যেকদিন সকাল সাড়ে নটায় সংসদে আসেন। আর ফেরেন সভা মুলতবির প্রায় এক ঘণ্টা পরে। এছাড়া যে কোনও বিল পেশের আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সচিবের সঙ্গে প্রস্তাবিত বিল নিয়ে বৈঠক করেন। বিলটি আইনে পরিণত হলে কী হতে পারে তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।”
শাসক শিবির সূত্রে খবর, স্বাধীনতার পর কোনও লোকসভার প্রথম অধিবেশনে এতগুলি বিল পাস হয়নি। এটা মোদি সরকারের বড় সাফল্য। অন্যদিকে এই বিষয়টিকে সংখ্যার জোরে গণতন্ত্রের হত্যা বলে অভিযোগ করছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, কোনও রকম স্ক্রুটিনি ছাড়াই অনেক বিল সংসদে পেশ করা হয়েছিল। অল্প কিছু বিলে স্ক্রুটিনি হয়েছে। মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বললেও স্বৈরাচারী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে সরকারের আচরণে। সংখ্যার জোরে বিরোধী সাংসদদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি পেশ হওয়ার আগে সংসদে্র স্থায়ী কমিটিতে তাৎক্ষণিক তিন তালাক,আরটিআই ও ইউএপিএ বিল নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছিল। কিন্তু সরকারপক্ষ তা মানেনি বলেই অভিযোগ।
সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইট করেছিলেন, ” মাত্র পাঁচ শতাংশ বিল পেশের আগে স্ক্রুটিনি করা হচ্ছে। সরকার কী এটা পিৎজা ডেলিভারির কাজ মনে করছে?” গত সপ্তাহে এভাবে বিল পাসের প্রতিবাদে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বিরোধীদের তরফে। তাতে সই করেছেন তৃণমূল, তেলগু দেশম পার্টি ও বিএসপি-সহ ১৭টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.