সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তচোষার ভয়ে এখন কাঁটা ওড়িশার ঝুমকা গ্রাম। সম্প্রতি সেই গ্রামের এক শিশুকন্যা মারা গিয়েছে। আর সেই মৃত্যু ঘিরেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাসের সীমা কোথায় পৌঁছতে পারে, তার নমুনা দেখাল ওড়িশার এই ঝুমকা গ্রাম। মাত্র চার বছরের এক শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হল একটি টিনের বাক্স থেকে। আর তা থেকেই ছড়াল উত্তেজনা। ছোট্ট ওই মেয়েটির পরিবারের মতে, ‘মেয়েকে ওই ডাইনিই খেয়েছে। নাহলে চার বছরের মেয়ের গলায় রক্তের দাগ থাকবে কেন?’
মেয়েটির নাম ইন্দ্রমণি সাধ। বয়স চার বছর। ঝুমকা গ্রামে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত সে। গ্রামটি আদিবাসীদের। শহর থেকেও অনেক দূরে। অন্ধবিশ্বাস এখনও গ্রাম থেকে সম্পূর্ণ যায়নি। এদিন ঘরের বাইরে একাই খেলছিল ইন্দ্রমণি। সেখান থেকে আচমকাই উধাও হয়ে যায় সে। খোঁজ খোঁজ রব ওঠে গ্রাম জুড়ে। গোটা গ্রাম ঘুরে যখন গ্রামবাসীরা শঙ্খরানি নাথের বাড়ির কাছে আসেন, তখন একটি টিনের বাক্সের মধ্যে পাওয়া যায় ইন্দ্রমণির দেহ। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
তখন থেকেই আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। কারণ ইন্দ্রমণির ঘাড়ে রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। এছাড়া তার উদরেও রয়েছে রক্তের দাগ। সেখান থেকেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। মেয়েটির বাবা-মায়ের বক্তব্য, তাঁদের মেয়েকে প্রথমে অপহরণ করা হয়েছে। তারপর তার উপর প্রয়োগ করা হয়েছে কোনও ডাকিনি বিদ্যা। কোনও রক্তচোষা নিশ্চয়ই তাদের মেয়ের শরীর থেকে রক্ত শুষে নিয়েছে। নাহলে মেয়ের ঘাড়ের কাছে আর উদরে ক্ষতচিহ্ন থাকবে কেন?
যদিও খুব স্বাভাবিকভাবেই এই অন্ধবিশ্বাসে সম্মতি দেয়নি পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। এলাকায় দু’টি আলাদা আলাদা দল পাঠিয়েছে পুলিশ। শঙ্খরানিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদিও তার বক্তব্য, মেয়েটির মৃত্যুর সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই। সে নবীন সাহা নামে এক ব্যক্তির দিকে আঙুল তুলেছে। শঙ্খরানির বক্তব্য, ওই নবীন সাহা নিশ্চয়ই শিশুটিকে খুন করে তার বাড়ির সামনে ফেলে দিয়েছে। এদিকে নবীন সাহাও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যদিও মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, শঙ্খরানি নাথই তাঁর মেয়ের রক্ত খেয়েছে। এলাকার অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার রবি নারায়ণ জানিয়েছেন, গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই ২ জনকে পাকড়াও করেছে। গ্রামবাসীদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.