Advertisement
Advertisement

‘দাদাগিরি’ বন্ধ করুন! বিজেপিকে কড়া বার্তা শরিকদের

এনডিএ-র অন্দরে জমেছে ক্ষোভ, ২০১৯-এ চাপে মোদি-শাহ জুটি৷

 Will be in big danger in 2019 ,  NDA alliance warn BJP
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 2, 2018 8:17 am
  • Updated:August 21, 2018 8:01 pm  

নন্দিতা রায়: বাইরে বিরোধীদের চাপ তো রয়েইছে, এবার ঘরেও চাপ বাড়ছে পদ্ম শিবিরের৷ ঘরে-বাইরে কার্যত উভয়সংকটে দল৷ ফলপ্রকাশের কাটার আগেই বাইরে শুরু হয়েছেমুখ খোলা। শিবসেনা, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ), রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টিও (আরএলএসপি) বড় শরিকের সমালোচনায় সরব হয়েছে। পাশাপাশি, মুখ খুলেছেন দলের প্রাক্তন সাংসদ চন্দন মিত্রও। সব মিলিয়ে বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়ছে৷ যদিও উপনির্বাচনের খারাপ ফল নিয়ে বিজেপি নেতারা এখনও কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। দলের মুখপাত্র ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর শুক্রবার ফের বলেন, “উপনির্বাচনের ফল দেখে কিছু বোঝা যায় না। এখানে অনেক কম মানুষ ভোট দিতে আসেন এবং স্থানীয় বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়। উপনির্বাচনে কোথাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রচারে যাননি। ফলে তাঁর ম্যাজিক ফিকে হয়ে গিয়েছে, একথাও বলা যায় না। ২০১৯-এ আরও স্পষ্ট করে বোঝা যাবে মোদি ম্যাজিক অব্যাহত।”

[আয়কর দপ্তরকে বেনামী সম্পত্তির খবর দিতে পারলেই ৫ কোটি টাকা ইনাম!]

Advertisement

লোকসভায় বিজেপি একাই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। সরকার টিকিয়ে রাখতে কোনও শরিকের উপরে নির্ভর করতে হয় না বিজেপিকে। সেই অহঙ্কারে এনডিএ-র অন্য শরিকদের বিজেপি আদৌ গুরুত্ব দেয় না, এমন অভিযোগ বহুদিন ধরেই করে আসছে শিবসেনা। এমনকী, জোট ছেড়ে না বেরলেও কয়েকটি নির্বাচনে তারা বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়েছে। কিন্তু হাওয়া ঘোরার ইঙ্গিত মিলতেই শিবসেনার পাশাপাশি অন্যান্য শরিকরাও বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁতনখ বের করতে শুরু করেছে। বিহারে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন নীতীশ কুমার। কিন্তু মাঝপথেই জোট ভেঙে এনডিএ-তে সামিল হন এবং বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে বিহারে নতুন সরকার গড়েন। এই ‘ডিগবাজির’ পরে নীতীশকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়েছে আরজেডি-কংগ্রেস। একের পর এক উপনির্বাচনে হারতে হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এনডিএ-তে গুরুত্ব পাচ্ছেন না নীতীশ৷ বিহারের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ বা বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হতেই মুখ খুলে জেডি (ইউ) বলেছে, নানা কারণে দেশে ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষোভ’ তৈরি হয়েছে। বিজেপি সে ক্ষোভকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতেই পারেনি। এমনই মন্তব্য করা হয়েছে জেডি(ইউ)-এর তরফে। হারের পরে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খোলার কারণটা কী, তাও আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন জেডি (ইউ)-এর অন্যতম সিনিয়র নেতা তথা নীতীশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কে সি ত্যাগী। “এনডিএ একটা বৃহৎ জোট। এবং আমরা আশা করি বড় শরিকের নেতা হিসেবে অমিত শাহ অন্য শরিকদের সঙ্গে উন্নততর যোগাযোগ রেখে চলার বিষয়ে উদ্যোগী হবেন,” বলেছেন ত্যাগী। পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মানুষের ক্ষোভের কথাও বলেছে জেডি (ইউ)।

[‘হিংলিশ’ ভাষায় পরীক্ষা দিতে পারবেন পড়ুয়ারা, অভিনব সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের]

শুধু নীতীশের দল নয়, বিহারে বিজেপির আর এক শরিক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহার দল রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টিও (আরএলএসপি) বড় শরিকের সমালোচনায় সরব হয়েছে। নীতীশের দলের সুর কিছুটা নরম। কিন্তু আরএলএসপি-র আক্রমণ অত্যন্ত আক্রমাণত্মক। সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যের অভিযোগ তুলেছে তারা। “এনডিএ-র অন্দরে অসন্তোষ যে বেশ কিছু দিন ধরেই বাড়ছে, তা আর কোনও গোপন কথা নয়। বিজেপি যে দাদাগিরি চালায়, তার জেরেই মূলত এই অসন্তোষ। আশা করি বিজেপির হাইকমান্ডের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। শরিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে জোটকে শক্তিশালী করার ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা,’ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে উপেন্দ্র কুশওয়াহার দল। গত মার্চে অসন্তোষ প্রকাশ করে জোট ছেড়েছিলেন দীর্ঘদিনের সঙ্গী চন্দ্রবাবু নায়ডু।

[রামায়ণের সময়েও নাকি ছিল টেস্ট টিউব বেবি: দীনেশ শর্মা]

গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এসেছে চন্দন মিত্রের মন্তব্য। প্রবীণ বিজেপি নেতা চন্দন সাংসদ ছিলেন। ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠও। নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের জমানায় ক্ষমতার বৃত্ত থেকে চন্দন কিছুটা দূরে। উপনির্বাচনে ধাক্কার পরে তাঁর মুখে কার্যত শরিক দলগুলির কথার প্রতিধ্বনিই শোনা গেল। কোনও কোনও অংশে শরিকদের চেয়েও চড়া চন্দনের বয়ান। সংবাদমাধ্যমে হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে চন্দন টানা ১৬ দিন ধরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরে ১ পয়সা দাম কমানোর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, “এটা একটা নিষ্ঠুর রসিকতা।” তাঁর আরও ক্ষোভ, “পরিবারের মধ্যে বিবাদ হতেই পারে। কিন্তু তা সময়ে না সামলালে রাজনৈতিক সমর্থনের ভিতটাই ধসে যেতে পারে। টিডিপি কেন জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেল? তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ শরিক ছিল। শিবসেনা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে কেন? খতিয়ে দেখা জরুরি।” বিরোধী দলগুলি ঐক্যবদ্ধ থাকলে ২০১৯-এ বিজেপির লড়াই খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন চন্দন। শরিকদের ক্ষোভ সামাল দিতে না পারলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের জুটি যে আরও চাপে পড়বে, এখন থেকেই তার ইঙ্গিত মিলছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement