সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পতঞ্জলির (Patanjali) বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় এবার আদালতের কাছে জনসমক্ষে লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইবেন বলে আর্জি জানালেন রামদেব। যদিও সে আর্জি গ্রহণ করল না শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। পাশাপাশি শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম তোপের মুখে পড়লেন বাবা রামদেব (Ramdev) ও আচার্য বালকৃষ্ণ। জনসমক্ষে ক্ষমার আর্জি প্রসঙ্গে আদালতের তরফে কড়া সুরে প্রশ্ন করা হল, ‘কেন ক্ষমা করা হবে আপনাকে?’ পাশাপাশি আদালত জানায়, ‘আপনি কোনওভাবেই নির্দোষ নন। তাহলে একই কথা বারবার বলার প্রয়োজন কী?’
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে আদালতে উপস্থিত হন পতঞ্জলি সংস্থার প্রধান আচার্য বালকৃষ্ণ ও বাবা রামদেব। আদালতে তাঁদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করতে চান তারা। আদালত অমান্য করার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষমা চাইবেন অভিযুক্তরা। পাশাপাশি আদালতে রামদেব বলেন, ‘আগামী দিনে আমি এই বিষয়ে সতর্ক থাকব। আমি জানি কোটি কোটি মানুষ আমাদের সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন।’ রামদেবের বক্তব্য শোনার পর আদালত জানায়, “আমাদের কঠোর মনোভাবের পর আপনি এই ধরনের মন্তব্য করছেন।” পাশাপাশি বলা হয়, “আপনি নিজেও জানেন, যে অসুখের চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি, তার চিকিৎসা আপনিও করতে পারবেন না। ফলে আইন সকলের জন্য সমান।” কেন ক্ষমা করা হবে, সে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।
অন্যদিকে, এলোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা প্রসঙ্গে আচার্য বালকৃষ্ণ বলেন, ‘আমাদের অজ্ঞানতাবশত ভুল হয়ে গিয়েছে।’ পালটা শীর্ষ আদালত জানায়, ‘আপনি এলোপ্যাথির দিকে আঙুল তুলতে পারেন না।’ রামদেব জানান, ‘অতি উৎসাহিত হয়ে আমরা এই কাজ করে ফেলেছি। এলোপ্যাথি নিয়ে আমরা কখনও আর কিছু বলব না। এই বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব।’ যদিও সুপ্রিম কোর্টের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আদালতে এসব অনুনয় গ্রাহ্য হয় না। আপনাদের অতীত উদাহরণ ভালো নয়। ফলে আপনাদের ক্ষমা চাওয়ার আবেদন স্বীকার করা হবে কি না, আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৩ এপ্রিল। সেদিন রামদেব ও বালকৃষ্ণ দুজনকেই আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় কেন্দ্রের চোখ বুজে থাকার ঘটনায় আগেই ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি পতঞ্জলির ক্ষমা চাওয়ার আর্জি প্রসঙ্গে আদালতের তরফে বলা হয়, ‘এই ক্ষমাপ্রার্থনা শুধুই কাগজে কলমে। আমরা গ্রহণ করছি না। বিষয়টিকে (বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন) ইচ্ছাকৃত ভাবে নিয়মের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছি।’ বিচারপতি আরও জানান, রামদেব-বালকৃষ্ণর হলফনামা প্রথমে মিডিয়াকে জাানানো হয় পরে শীর্ষ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার পতঞ্জলির প্রচার সর্বস্বতা। পাশাপাশি আদালতের তোপের মুখে পড়ে উত্তরাখণ্ড সরকারও। সেই মামলায় এদিনও ক্ষমার আর্জি মঞ্জুর হল না পতঞ্জলির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.