সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ছ’মাসের ব্যবধান। এর মধ্যেই তিন রাজ্যের চারজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে স্রেফ চোখের ইশারায় বদলে দিল বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ডেই মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে দু’বার। কর্ণাটকে একসময়ের অবিসংবাদী নেতা ইয়েদুরাপ্পাকেও মসনদ থেকে সরিয়েছে বিজেপি। সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাটেও গদিচ্যুত হলেন বিজয় রূপানি (Vijay Rupani)।
গত ১০ মার্চ ত্রিবেন্দ্র রাওয়াতকে (Trivendra Singh Rawat) সরিয়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী করা হয় তিরথ সিং রাওয়াতকে। কিন্তু মাস চারেক যেতে না যেতে তাঁকেও সরতে হয় মসনদ থেকে। ৩ জুলাই, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন তিরথ সিং রাওয়াতও। এবার দায়িত্ব নেন পুষ্কর সিং ধামী। অর্থাৎ ছ’মাসের মধ্যে দু’বার মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে উত্তরাখণ্ডেই। আবার কর্ণাটকে ইয়েদুরাপ্পার (B. S. Yediyurappa) মতো প্রভাবশালী নেতাকে নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছিল। গত ২৬ জুলাই তাঁকেও সরিয়ে দেন মোদি-শাহরা। এরপরই গতকাল একপ্রকার হঠাৎ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয় বিজয় রূপানিকে।
কিন্তু কেন একের পর এক রাজ্যে এভাবে মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হচ্ছে বিজেপিকে? আসলে দল কলেবরে বাড়ার ফলে বিজেপির অভ্যন্তরীণ কলহও বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, কর্ণাটক, গোয়া, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ- কোন্দলে কেউ কারও কম নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও এখন খোলামেলা অবজ্ঞা করছেন অনেক রাজ্যের রাজ্য নেতারা। কোনও রাজ্যেই মোদি-শাহ (Amit Shah) জুটির নির্দেশ বেদবাক্যের মতো মেনে নেওয়া হচ্ছে না। বরং কলহ দিন-দিন প্রকাশ্য ও প্রকটতর হচ্ছে।চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই কলহ সামাল দেওয়া রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মোদি-শাহর কাছে।
আর সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই সম্ভবত ‘আয়রন হ্যান্ড’ নীতি নিচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মুঠো শিথিল করা যাবে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রাশ বিন্দুমাত্র হালকা হলে রাজ্যস্তরে দলের যে কী অবস্থা হতে পারে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ কংগ্রেস (Congress)। বিজেপির যাতে সেই পরিণতি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই সম্ভবত একের পর এক রাজ্যে নেমে আসছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কড়া শাসনের খড়গ। রাজ্যের প্রভাবশালী নেতাদের (এমনকী মুখ্যমন্ত্রীদেরও) মোদি-অমিত শাহরা সাফ বার্তা দিচ্ছেন, ‘তোমাকে আমাদের পছন্দ নয়। অতএব আসতে পার।’ রূপানি, ইয়েদুরাপ্পাদের এভাবে সরিয়ে দেওয়াটা অন্য রাজ্যের নেতাদের জন্যও বার্তা। গোষ্ঠী কোন্দলে মেতে থাকলে দল যে একেবারেই তা বরদাস্ত করবে না, সেটা সাফ বুঝিয়ে দিচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.