বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: প্রথম কোনও মহিলা? নাকি প্রথম কোন বাঙালির হাতে পার্টি পরিচালনার দায়িত্ব সঁপে দিতে চলেছেন কমরেড কুলের নেতারা? রবি অথবা সোমেই ঠিক হয়ে যাবে প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হবেন। এ কে গোপালন ভবনের দেওয়ালে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে তিনটি নাম – প্রথমজন পার্টির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট জায়া বৃন্দা কারাট। দ্বিতীয়জন হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তৃতীয়জন কেরলের এম এ বেবি। শনিবার সিপিএম পলিটব্যুরোর বৈঠক। রবি ও সোমবার পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানেই ঠিক হবে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে হবেন।
শনিবার দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে হবে প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণ সভা। উপস্থিত থাকার কথা পাঠিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব-সহ বাম কংগ্রেস নেতৃত্বের। পরের দিন থেকে দুদিন ধরে চলবে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুর পর সাধারণ সম্পাদকের পদ খালি। আগামী দিনে কে ওই দায়িত্ব সামলাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় কমিটি। যিনি এই দায়িত্ব পাবেন, তিনি এক বছরের জন্য দায়িত্ব সামলাবেন। কারণ, আগামী বছর সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পার্টি কংগ্রেসে। এই প্রথম কোনও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বে থাকাকালীন প্রয়াত হলেন। যেহেতু আগামী বছর পার্টি কংগ্রেস রয়েছে তাই অন্তর্বর্তী বা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে বলে জানান পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য।
এবার প্রশ্ন, কে এই দায়িত্ব পাবেন? সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দুজন। বৃন্দা কারাট ও মানিক সরকার। তবে এগিয়ে বৃন্দা। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ওই সদস্য জানান, জাতীয় রাজনীতিতে বৃন্দা পরিচিত মুখ। এতদিন অন্য বাম -সহ অন্যান্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কাজ করতেন মূলত দুজন। সীতারাম ইয়েচুরি ও বৃন্দা কারাট। ইয়েচুরির অবর্তমানে বৃন্দাই সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি অভয়া মামলায় নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী পরিবর্তনের কাজ তিনিই করেছেন। আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, মানিক সরকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কারণে জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। কিন্তু অন্যান্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কাজ কোনদিন করেননি। এছাড়াও দিল্লিতে রাজনীতি করেননি। রাজধানীর রাজনীতির সঙ্গে তিনি সেভাবে পরিচিত নন। তাছাড়া বিজেপি ত্রিপুরায় ত্রিপুরায় ক্ষমতার আসার পর থেকেই বিরোধীরা ভয়ংকরভাবে আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে তিনি ত্রিপুরা ছেড়ে দিল্লিতে রাজনীতি করতে আসবেন কিনা তা নিয়ে পার্টির অন্দরেই সংশয় রয়ে গিয়েছে। তাই দৌড়ে বৃন্দা কারাট অন্যান্যদের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। এই দুজন ছাড়াও কেরলের আরেক নেতা এম এ বেবির নাম ভেসে উঠলেও তিনি জাতীয় রাজনীতিতে অপরিচিত মুখ। ফলে তার হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন।