সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মোদি, তুঝসে বয়ের নেহি, পর বসুন্ধরা তেরি খয়ের নেহি’, এই স্লোগান চোখের বালি হয়ে উঠেছিল বিজেপির (BJP)। চলতি নির্বাচনেও গেরুয়া শিবিরের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে উঠেছিলেন রাজস্থানের (Rajasthan) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক মিডিয়া রিপোর্টের দাবি ছিল, কোণঠাসা বসুন্ধরা ক্যাম্পের কারণে নির্বাচনে ক্ষতি হবে বিজেপির। যদিও উত্তর ভারতের তিন রাজ্যের গেরুয়া ঝড় প্রাক নির্বাচনী যাবতীয় অঙ্ককে ভুল প্রমাণ করেছে। ২০০৩ সাল থেকে জিতে আসে ঝালরাপাটন বিধানসভা আসনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৫১ হাজার ভোটে এগিয়ে বসুন্ধরা রাজে। সব মিলিয়ে জটিলতম প্রশ্ন, ‘মরুরাজ্যের যোগী’ বালকনাথ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোরকে পিছনে ফেলে বসুন্ধরাই কি ফের মরুরাজ্যের মসনদে বসতে চলেছেন?
এক্সিট পোলে রাজস্থানে কংগ্রেস-বিজেপির লড়াই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও ভোটের আগে তিন কারণে আত্মবিশ্বাসী ছিল গেরুয়া শিবির। প্রথম কারণ, ভোটের ইতিহাস। কী সেই ইতিহাস? প্রতি পাঁচ বছরে রাজস্থানের গদি বদলায়। ১৯৯৮-তে অশোক গেহলট, ২০০৩-এ বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, ২০০৮-এ ফের গেহলট, ২০১৩-এ বসুন্ধরা, ২০১৮-তে ফের গেহলট। সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী এবার বিজেপির টার্ন। “রাজস্থান পে তো হর পাঁচ সাল অন্তর সত্তা বদলতি হ্যায়। তো ইসবার তো বিজেপি কি-ই বারি হ্যায়…।” আমজনতার এহেন সংলাপে মনে বল পাচ্ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
দ্বিতীয় কারণটিকে ভোটের ফল প্রকাশের পর মনে হচ্ছে বেজয়া উদ্ভট। কী সেই কারণ? বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত ছিল, বসুন্ধরা সাইড লাইনে থাকায় বিজেপির আগের সরকারের নেতিবাচক ছাপ পড়বে না ভোটে। এবং তৃতীয় কারণ একটি বেসরকারি চ্যানেলের সমীক্ষা। যেখানে বিজেপিকে ২০০ আসনের মধ্যে ১৩০-এর কাছাকাছি দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবে সেই দিকেই এগোচ্ছে ভোটের ফল। ইতিমধ্যে ১১৩ আসন বিজেপির জয় নিশ্চিত। যদিও তার চেয়ে বড় কথা, বসুন্ধরার কামব্যাক!
হার দূরে থাক। বড়সড় ব্যবধানে জিততে চলেছেন প্রাক নির্বাচনী পর্বের গেরুয়া শিবিরের ‘গলার কাঁটা’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। গেরুয়া ঝড়ে যদি বসুন্ধরাপন্থী বিধায়করাও জয় ছিনিয়ে নিতে পারেন, তবে নতুন করে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হয়ে উঠবেন মহারানি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে ‘মরুরাজ্যের যোগী’ বালকনাথের কী হবে। মস্তনাথ মঠের মহন্ত বালকনাথ আবার বিজেপির রাজস্থানের সহ-সভাপতিও বটে। নাথ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। প্রভাব অনস্বীকার্য। এছাড়াও রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোর। গতকাল তিনি বলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্বই ঠিক করবে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। নির্বাচন হল দলগত লড়াই। কাউকে তো নেতৃত্ব দিতেই হবে।” বলা বাহুল্য, বসুন্ধরার কাম ব্যাকে মরুরাজ্যে জটিলতা বাড়ল বিজেপির? রাজস্থান জয় নিশ্চিত জেনে সংযত খোদ বসুন্ধরাও। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই জয়ের কাণ্ডারি।” এর বাইরে নাম উঠছে আরও একজনের। তিনি জয়পুরের রাজ পরিবারের মেয়ে দিয়া কুমারী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.