সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির একটি বিজ্ঞপ্তির শব্দচয়ন নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাতে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানি (Harassment) রুখে দিতে মেয়েদেরই জানতে হবে, পুরুষবন্ধুর সঙ্গে মিশতে গেলে কোথায় সীমারেখা টানা উচিত। এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছেলেরা সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডা এবং যৌন হয়রানির মধ্যে যে সূক্ষ্ম রেখা রয়েছে তাকে অতিক্রম করে (কখনও কখনও অসতর্কভাবে, কখনও কখনও অসাবধানতাবশত)। মেয়েদেরও জানতে হবে, এই ধরনের হয়রানি এড়াতে কী ভাবে একটি রেখা টানতে হয় (তাদের এবং তাদের পুরুষ বন্ধুদের মধ্যে)। বিতর্কের সূত্রপাত সেখানেই।
প্রশ্ন উঠছে, দেশের একটি প্রথম শ্রেণির কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কুলারে এই ভাষায় লেখা হবে কেন? প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষকরাই। আইসিসি জানিয়েছে, প্রতি মাসে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি আলোচনাসভা আয়োজন করা হবে। কোনটা হেনস্তা আর কোনটা নয় সে নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তের কারণ কী, সেই প্রশ্নও উঠছে।
আইসিসি বা অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি জানতে পেরেছে, বহু ছাত্রীই ভয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে না গিয়ে বন্ধুমহলে যৌন নির্যাতনের কথা শেয়ার করে থাকেন। অনেক সময় পুরুষবন্ধুরা হয়তো সেই সব কথার গুরুত্ব বোঝেন না। তাই পড়ুয়াদের কোনটা যৌন হয়রানি সেটা বোঝা উচিত সবার আগে। প্রতি মাসের এই আলোচনাসভা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের অবস্থা আরও ভাল হবে। এই জাতীয় আলোচনাসভা থেকে ছাত্র ও ছাত্রী উভয়ের জন্যই আয়োজন করা হচ্ছে।
নতুন বছরে জানুয়ারি মাসে এই যৌন হয়রানি সংক্রান্ত আলোচনাসভা বসবে। এই আলোচনাসভার গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকরাই। প্রশ্ন, এ জাতীয় সেশনের প্রয়োজনীতা আদৌ কতটা জরুরি। তাঁদের আরও অভিযোগ, যৌন হয়রানিকে তুচ্ছ রূপান্তরিত করা ছাড়া আর এই অধিবেশনের আর কোনও গুরুত্ব নেই। সেই সঙ্গে বাম ছাত্র সংগঠন আইসা জানাচ্ছে, মেয়েদেরই দোষের ভাগী করে দেখানো হয়। আইসিসি আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই অভ্যাস তৈরি করে আসছে। এবার সেটাই প্রতিষ্ঠা পাবে। এই আলোচনাসভায় জেএনইউ মেয়েদের কাছে ভয়ের জায়গা হয়ে দাঁড়াবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.