সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম অজাতশত্রু নেতা ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। সংসদে তাঁর রসবোধ ও কবি মনের পরিচয় বহুবার পেয়েছে দেশ। গম্ভীর রাজনেতার মনের অন্দরমহলে যে একই সঙ্গে রসিক ও চতুর একটি ব্যক্তি ঘাপটি মেরে ছিল তা একবার হাড়েহাড়ে বুঝেছিল চিন। দিল্লির চিনা দূতবাসে ৮০০টি ভেড়া পাঠিয়ে চৈনিক কর্তাদের রীতিমতো বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিলেন তরুণ বাজপেয়ী।
তা, আচমকা চিনাদের ভেড়া পাঠাতে গেলেন কেন বাজপেয়ী? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে একটু পিছিয়ে যেতে হবে। সালটা ছিল ১৯৬৫। তখন দেশের বুকে চিনের (China) হাতে পরাজয়ের ক্ষত দগদগে ঘায়ের মতো রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ফের আগ্রাসী হয়ে উঠল লালফৌজ। সীমান্তে শুরু হল চিনা হানাদার বাহিনীর আনাগোনা। ১৯৬২ সালে যুদ্ধের কারণ হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ তুলেছিল চিন। যার মধ্যে একটি হল, ভারতীয় জওয়ানরা নাকি চিনের ৮০০টি ভেড়া আর ৫৯টি ইয়াক চুরি করেছে। এবারও তেমনই কোনও বাহানা খোঁজা শুরু করেছিল চিনা ফৌজ। তাই চিনাদের জবাব দিতে দিল্লির চিনা দূতাবাসে একটি ট্রাকে চাপিয়ে ৮০০টি ভেড়া পাঠিয়েছিলেন জনসংঘের সেই সময়কার তরুণ নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী। ভেড়াগুলির গায়ে লেখা ছিল, ‘আমাদের খাও, কিন্তু যুদ্ধের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাও।’
এদিকে, বাজপেয়ীর এহেন সরেস জবাবে অপমানে লাল হয়ে উঠেছিল চিনের মুখ। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর কার্যালয়ে সরাসরি চিঠি পাঠিয়ে বেজিং জানতে চেয়েছিল ভারত কি ‘মশকরা করছে’। সেই চিঠিতে চিনের বক্তব্য ছিল, “চিনের জনগণকে অপমান করেছেন বাজপেয়ী। আর এই ব্যাপারে তাঁর পিছনে মদত রয়েছে শাস্ত্রীর সরকারের।” সেই চিঠির জবাবে ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, “এটা মানুষের আবেগ। এর সঙ্গে সরকারের কোনও যোগসাজশ নেই। এই প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছিল।” যদিও বাজপেয়ীর এহেন জবাবের পরও মতিগতি পালটায়নি চিন। ১৯৬৭ সালে ফের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভেড়া চুরির অভিযোগ তুলেছিল বেজিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.