সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আয়করে ‘বিরাট’ ছাড় দিয়ে বাজেটে নতুন করকাঠামো ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন, নতুন কর কাঠামোই হবে ‘ডিফল্ট ট্যাক্স রেজিম’ (Default Tax Regeime)। অর্থাৎ, এই কাঠামোই সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। যদি কেউ পুরনো কাঠামোয় থাকতে চান তাহলে তাঁকে তাঁর পছন্দ জানাতে হবে। অর্থাৎ কারও উপরই জোর করে নতুন করকাঠামো চাপিয়ে দেওয়া হবে না। এখানেই সংশয়ে মধ্যবিত্ত করদাতারা। নতুন নাকি পুরনো, কোন করকাঠামোয় কর দেবেন তাঁরা? এ নিয়ে দোলাচল আছে।
সাদা চোখে দেখলে মনে হতেই পারে নির্মলার নতুন কাঠামো অনেক সাশ্রয়ী। কারণ নতুন কাঠামোয় আয়কর ছাড়ের পরিধি বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এখন দুই কাঠামোতেই ৫ লক্ষ টাকা করযোগ্য আয় পর্যন্ত রিবেট মেলে। নতুন কাঠামোয় ট্যাক্স স্ল্যাবের সংখ্যা ৬ থেকে কমিয়ে ৫ করা হয়েছে। ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। অর্থমন্ত্রী এদিন বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে গিয়ে জানান, নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা সব শ্রেণির করদাতাদেরই সুবিধা হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থায় যে ব্যক্তির ৯ লক্ষ টাকা বার্ষিক করযোগ্য আয় তাঁকে মাত্র ৫ শতাংশ হারে মোট ৪৫ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এরসঙ্গে সারচার্জ আলাদা। পুরনো ব্যবস্থায় ছাড়ের সুযোগ নেওয়ার পরও এই ব্যক্তিকে ৬০ হাজার টাকা আয়কর দিতে হত। নতুন কাঠামোয় চাকরিজীবী ও পেনশনভোগীদের স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের চালু করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর দাবি, নতুন আয়কর কাঠামোর জন্য সরকারকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে।
আয়করের (Tax Rebate) এই ছাড় যে ভোটের অঙ্ক মাথায় রেখে তা নিয়ে সংশয় নেই। যদিও সমালোচকদের মত, গত ৫ বছরে মূল্যবৃদ্ধি যে হারে ঘটেছে তাতে এই সামান্য ছাড়ে মধ্যবিত্তের খুব একটা লাভ হবে না। উপকৃত হবেন ‘সুপার রিচ’রা। কারণ, সারচার্জের ঊর্ধ্বসীমা ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। তাছাড়া নয়া আয়কর কাঠামোয় বিনিয়োগের জন্য আলাদা করে কোনও ছাড় মিলবে না। এক জন বেতনভোগী কোথায় কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন, তা নিয়ে সরকারের কোনও মাথাব্যথা থাকবে না। মোট আয় যত, তার উপরেই আয়কর দিতে হবে। অর্থাৎ বিনিয়োগের জন্য আলাদা ভাবে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। সেটাই ভাবাচ্ছে মধ্যবিত্তকে।
চাপ আরও রয়েছে। নতুন কাঠামোয় বড় মাপের বিমাকে করছাড়ের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে নতুন করে যারা বিমা করবেন, তাঁদের বিমা পলিসির বার্ষিক প্রিমিয়াম যদি ৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশি হয়, তাহলে সেটা করছাড়ের আওতায় আসবে না। অর্থাৎ করছাড় পাওয়ার আরও একটা রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল। এতে অবশ্য খানিকটা চাপে পড়বেন ‘সুপার রিচ’রাই। কারণ অত বড় মাপের বিমা সাধারণত মধ্যবিত্তরা করেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.