ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায়ে ইলেক্টোরাল বন্ড অর্থাৎ নির্বাচনী বন্ডে রাজনৈতিক অনুদান দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ইলেক্টোরাল বন্ডকে এতদিন নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে মোদি (Narendra Modi) সরকারের মাস্টারস্ট্রোক হিসাবে দেখা হত। আর গত পাঁচ বছরে ইলেক্টোরাল বন্ডে বিরোধীদের থেকে কয়েক গুণ বেশি চাঁদাও পেয়েছে গেরুয়া শিবিরই। প্রশ্ন হল, কী এই ইলেক্টোরাল বন্ড, কেনই বা এত বিতর্ক।
২০১৭ সালে বাজেট বক্তৃতায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি (Arun Jaitly) এই ইলেক্টোরাল বন্ড আনার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৮ সাল থেকে এই বন্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ইলেক্টোরাল বন্ড এক ধরনের দলিল। কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলের হাতে তুলে দিতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নেয়। এই বন্ড কে বা কারা কিনছেন, তাঁর পরিচয় সম্পূর্ণভাবে গোপন রাখা হয়। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ ও ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যায়। হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলিকে বন্ড ভাঙিয়ে নিতে হয়। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাঙ্ক থেকে বন্ড পাওয়া যায়।
সরকারের দাবি ছিল, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা কমাতে এবং অনুদানের মাধ্যমে কালো টাকার আদানপ্রদান রুখতে উপযোগী হবে ইলেক্টরাল বন্ড। সরকারের দাবি ছিল, নগদে লেনদেন হলে রাজনৈতিক দলগুলি সরাসরি নগদে অনুদান নিলে এর মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা কালো টাকা সাদা করে ফেলছে। যদিও বিরোধী দল ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ছিল, এতে অস্বচ্ছতা আরও বাড়বে। বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই। বন্ড ভাঙাচ্ছে রাজনৈতিক দল। ফলে কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে সরকারের থেকে কী সুবিধে আদায় করছে, তা কিছুই বোঝা যাবে না।
বিরোধীদের সেই যুক্তিই কার্যত মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের আশঙ্কা, বন্ডের মাধ্যমে এভাবে অনুদান দেওয়ার মধ্যে পালটা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। বস্তুত, কর্পোরেটরা অনুদানের বিনিময়ে পালটা অনৈতিক সুবিধা প্রত্যাশা করে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের (DY Chandrachud) নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে জানিয়ে দিয়েছে, মোদি জমানায় চালু হওয়া ইলেক্টোরাল বন্ড অসাংবিধানিক। দ্রুত সেটা বন্ধ হওয়া উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.