ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের সেই রাতের কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠে দেশবাসী। নৃশংসভাবে নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করা হয়। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতালে হার মানতে হয়েছিল দেশের সাহসী মেয়েকে। তারপর শুরু হয় এক নতুন লড়াই। মেয়েকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার লড়াই। মেয়ে হারানো মা দীর্ঘ লড়াইয়ের সুফল পেলেন শুক্রবার ভোর ৫.৩০ মিনিটে। দিল্লির তিহার জেলের তিন নম্বর জেলে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হল মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা ও পবন গুপ্তকে।
কী পরিচয় এই চারজনের?
মুকেশ সিং: বাস সাফাইয়ের কাজ করত সে। পার্টটাইম বাসও চালাত। ১৬ ডিসেম্বরের সেই রাতে ওই বাসে ওঠা নির্ভয়াকে লোহার রড দিয়ে মেরেছিল সে।
অক্ষয় ঠাকুর: বিহারের এই যুবক বিবাহিত ও তার এক ছেলে রয়েছে। পেশায় বাস সাফাইকারী। ফাঁসির আগে তার স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের দাবি জানিয়েছিলেন। সারাজীবন ধর্ষকের স্ত্রী হিসেবে কাটাতে চাননি তিনি।
বিনয় শর্মা: পেশায় জিম প্রশিক্ষক। সেই রাতে নাবালক নির্ভয়াকে ধর্ষণ করার সময় বিনয়ই বাসটি চালাচ্ছিল। এরপর মুকেশ সিংয়ের হাতে স্টিয়ারিং ধরিয়ে নির্ভয়াকে ধর্ষণ করে সে। চারজনের মধ্যে বিনয়ই একমাত্র ইংরাজি বলতে পারত।
পবন গুপ্তা: পেশায় ফল বিক্রেতা। নির্ভয়াকে ধর্ষণ করে ও তাঁর বন্ধুকে কটাক্ষ করে। তিহার জেলে থাকাকালীন স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করেছিল।
ফাঁসির আগের কয়েক ঘণ্টা কীভাবে কাটাল চার দোষী?
শোনা যাচ্ছে, বিনয়ের মা নাকি ছেলের জন্য নিজের হাতে রান্না করে এনেছিলেন। ছেলে পুরি খেতে ভালবাসে বলে পুরিও রান্না করেছিলেন। কিন্তু তিহার জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সে খাবার খাওয়ানোর অনুমতি দেয়নি। শুক্রবার ফাঁসিতে ঝোলার আগে প্রাতঃরাশও করেনি চারজন। স্নান থেকে বিরত থাকে তারা। তিহার জেলের তরফে জানানো হয়েছে, চারজনই নিজেদের শেষ ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেনি।
কী হল এদিন ভোরে?
জেল সুপার অফিসে পৌঁছে প্রথমেই দেখে নেন, নতুন করে আর কোনও নির্দেশ আসা বাকি আছে কি না। তারপরই দোষীদের কারাগারের দিকে এগিয়ে যান। ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে কারাগারে দোষীদের দেখতে পৌঁছান জেলাশাসক, মেডিক্যাল আধিকারিক এবং ডেপুটি সুপারিন্টেড্যান্টও। এরপর তাঁরা চলে যান ফাঁসির মঞ্চের দিকে। তখনও পর্যন্ত নিজেদের স্থানে কড়া নজরদারিতে ছিল চার ধর্ষক। পিছনে হাত বাঁধা অবস্থায় ডেপুটি সুপার ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধীরে ধীরে ফাঁসির মঞ্চে পৌঁছায় তারা। তারা সেখানে পৌঁছতেই সুপার মেজিস্ট্রেটকে জানান, যে তিনি দোষীদের তাদের বোধগম্য ভাষায় ওয়ারেন্ট পড়ে শুনিয়েছেন। এরপর সুতির টুপি দিতে তাদের মাথা ঢেকে ফেলা হয়। ফাঁসিকাঠ দেখতে দেওয়া হয়নি তাদের। পবন জল্লাদ নির্দেশ মেনে এরপর ফাঁসিতে ঝোলান চারজনকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.