Advertisement
Advertisement

Breaking News

দল নয় দেশই আগে, সংসদে রাজধর্মের পাঠ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী

তাঁর মৃত্যুতে দেশ ও দলের যে ক্ষতি হল তা পূরণ করা সম্ভব নয়।

What Atal Bihari Vajapyee taught in Parliament
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:August 17, 2018 10:13 am
  • Updated:August 17, 2018 3:52 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সালটা ছিল ১৯৯৬। মাত্র ১৩ দিনের শিশু অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিজেপি সরকার। দিল্লির অলিন্দে চলছে প্রবল চাপানউতোর। সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছে বিরোধী দলগুলি। ২৭ মে’র আস্থা ভোট নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। পরিস্থিতি প্রতিকূল, তা ভালই বুঝতে পারছিলেন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ বাজপেয়ী। অনেক চিন্তা ভাবনার পর ঠিক করলেন পরবর্তী পদক্ষেপ। যথারিত একটি খদ্দরের পাঞ্জাবি পড়ে সংসদে উপস্থিত হলেন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী। প্রশান্ত মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই মনের ভিতর কী ঝড় বইছে। বিরোধীদের মধ্যেও রয়েছে উদ্বেগ, কী করবেন বাজপেয়ী? কোনও বিচক্ষণ চালে বাজিমাত, না ইস্তফা দেবেন? ঝানু ওই রাজনীতিবিদকে সমীহ করে না এমন কেউই নেই তাবড় রাজনৈতিক দলগুলিতে।

[‘অটলজি সময়ের থেকে এগিয়ে ছিলেন’]

Advertisement

যাই হোক, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরই শুরু হবে আস্থাভোট। পরিচিত ভঙ্গিমায় উঠে দাঁড়ালেন বাজপেয়ী। শুরু হল বক্তৃতা। রাজনৈতিক বুলি নয়, শোনা গেল তুখোড় যুক্তি। সংসদ শুনল এক ভারতীয়র মনের কথা। অনুভব করল তাঁর আবেগ। সবাই মুগ্ধ। কোথাও বিন্দুমাত্র বিরোধিতা নেই। বাজপেয়ী বলে চললেন, “সংখ্যাবলে আমরা আজ পিছিয়ে। তা বলে দেশসেবার কাজ থেমে থাকবে না। অনেক রাজ্যেই আমদের উপস্থিতি রয়েছে। বিরোধী ও সরকার পক্ষ উভয়েই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অবদান কারও কম নয়। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতা করব।” এরপরই ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন বাজপেয়ী। তবে ওই দিনই ‘ইউনাইটেড ফ্রন্ট’ সরকারের পতনের কথা বলেছিলেন দূরদর্শী অটল। তবে সেদিনের ভাষণে সংসদের প্রতি বাজপেয়ীর যে কতটা আস্থা ছিল তা প্রকাশ পায়। তিনি বুঝিয়ে দেন অনাস্থা প্রস্তাব বা আস্থা ভোট, সংসদীয় গণতন্ত্রের অমোঘ অস্ত্র।

এর পরবর্তী ইতিহাস সবারই জানা। প্রধানমন্ত্রী পদে দেবগৌড়ার আসীন হওয়া। ১৯৯৮ সালে ইউনাইটেড ফ্রন্ট থেকে কংগ্রেসের সমর্থন তুলে নেওয়া। ফের নির্বাচন ও মসনদে এনডিএ-র দখল। বিষয়টা ইতিহাস নিয়ে মাতামাতি বা রাজনৈতিক বিশ্লেষণের নয়। একজন ব্যক্তি হিসেবে কেমন ছিলেন তিনি, বা গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর আস্থা কতটা ছিল, ঐতিহাসিক ভাষণে সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বাজপেয়ী। শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ নয় একাধারে কবি, সাহিত্যপ্রেমী ও তুখোড় বিশ্লেষকও ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে দেশ ও দলের যে ক্ষতি হল তা পূরণ করা সম্ভব নয়।

[চলে গেলেন ভারতীয় রাজনীতির পিতামহ, কে পড়াবেন রাজধর্মের পাঠ?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement