সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনও যবনিকা পতন হয়নি মধ্যপ্রদেশের মহানাটকের। করোনা ভাইরাস (Corona Virus)- র সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অধ্যক্ষ নর্মদাপ্রসাদ প্রজাপতি। এরপরই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ও দ্রুত আস্থা ভোট করানোর দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে ধাক্কা খেল কমল নাথের সরকার। তাদের তরফে থাকা আইনজীবীরা দুসপ্তাহ সময় চেয়েছিল। কিন্তু, তা দিতে রাজি হল না দেশের সর্বোচ্চ আদালত। পরিষ্কার জানিয়ে দিল, ঘোড়া কেনাবেচার জন্য সপ্তাহগুলি সোনার খনির মতো। যত সময় দেওয়া হবে তত ঘোড়া কেনা বেচার সময় বাড়বে। তাই শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় আস্থা ভোট করাতে হবে।
হোলির দিন ইস্তফা দিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তারপরই একে একে ইস্তফা দেন আরও ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক। এর ফলে কমল নাথের সরকার পড়ে যাওয়ার মতো উপক্রম হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্ব বিজেপির প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল লালজী ট্যান্ডনের সঙ্গে দেখা করে আস্থা ভোট করানোর দাবি জানায়। কিন্তু, এই সময়ই কমল নাথ সরকারের ত্রাতা হয়ে উঠেন বিধানসভার অধ্যক্ষ এনপি প্রজাপতি। ৬ জন বিধায়কের ইস্তফা গ্রহণ করে বাকিদের তাঁর সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে পাশাপাশি বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার পরেই তা ২৬ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনেও ২২ বিধায়কের ইস্তফা জমার বিষয়টির জন্য ১৪ দিনের সময় চায় কংগ্রেস। জানায়, তাদের বিধায়কদের সশরীরে হাজির হয়ে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। তাই যেন এই সময়টুকু দেওয়া হয়। কিন্ত, বিচারপতি চন্দ্রচূড় তখন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে। বলেন, আমরা এটা যাচাই করার ব্যবস্থা করতে পারি যে ওই বিধায়করা আদৌও স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন কিনা। এর জন্য বেঙ্গালুরু বা অন্য জায়গায় পরিদর্শকের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করতে পারি। তার মাধ্যমে অধ্যক্ষ সরাসরি ওই বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু, আস্থা ভোট দ্রুতই করতে হবে। আর বিধানসভায় অধিবেশন না থাকলেও সরকার যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ হারায় তাহলে রাজ্যপাল আস্থা ভোট করানোর নির্দেশ দিতেই পারে। এর মধ্যে ভুল কিছু নেই।
এর উত্তরে বিধানসভার অধ্যক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় চান। বলেন, কংগ্রেসের ওই বিধায়কদের মধ্যপ্রদেশে বাড়িতে ফিরতে দিন। ওঁরা পরিবার থেকে দূরে অস্বাভাবিক পরিবেশে বসবাস করছেন। ভিডিও কনফারেন্সের শুধুমাত্র একটি ধারণা পাওয়া যাবে। আসল সমস্যা মিটবে না।’ এর উত্তর বিচারপতি বলেন, সময় দিলেই ঘোড়া কেনাবেচার সুবিধা হবে। কারণ সপ্তাহগুলি হল সোনার খনির মতো। তাই দ্রুত ভোট করাতে হবে।
আদালতের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কমল নাথ বলেন, ‘আদালতের কথা মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে যাই হোক বিদ্রোহী বিধায়করা আমাদের সঙ্গেই আছেন।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.