সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিপুল ভোটে জিতলেন। হারালেন বিজেপিকে। বলা ভাল, গেরুয়া শিবিরের যাবতীয় ঔদ্ধত্য কার্যত চূর্ণ করে তাদের ধরাশায়ী করে দিলেন। মমতার এই বিশাল জয় নিঃসন্দেহে বিজেপিকে চিন্তায় রাখবে। মমতার যোগ্য বিরোধী হয়ে উঠতে কেন ব্যর্থ হল দল, গেরুয়া শিবিরের ভোট ম্যানেজাররা নিশ্চয়ই সেসব নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু কোথাও গিয়ে মমতার এই বিপুল ব্যবধানে জয় বিজেপির (BJP) থেকেও হয়তো বেশি চিন্তায় রাখবে কংগ্রেসকে।
মনে হতেই পারে, এ রাজ্যে কংগ্রেসের (Congress) তো হারানোর কিছুই নেই। ভবানীপুরে দল প্রার্থী দেয়নি। জঙ্গিপুরেও প্রার্থী ছিল না। সামশেরগঞ্জে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল, সেখানে তাঁরা দ্বিতীয় হয়েছে। রাজ্যের তিন কেন্দ্রের মধ্যে সেখানেই ব্যবধান সব চেয়ে কম। সেদিক থেকে দেখতে গেলে রাজ্যে কংগ্রেসের নতুন করে চিন্তা বাড়ার মতো কিছুই হয়নি। কিন্তু তবু কংগ্রেসের চিন্তা বাড়বে। আর সেটা জাতীয় স্তরে। কারণ, মমতার এই বিশাল ব্যবধানের জয়ে আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল, তাঁর মতো করে বিজেপির আগ্রাসন রুখে দিতে আর কেউ এই মুহূর্তে অন্তত পারবেন না।
বস্তুত, এখন তৃণমূল কংগ্রেস মমতাকে রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় স্তরের প্রধান বিরোধী নেত্রী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। দল হিসাবেও দেশের প্রধান বিরোধী শক্তি রূপে উঠে আসার চেষ্টা করছে তৃণমূল। তার আগে ভবানীপুর থেকেই গোটা দেশের উদ্দেশে বার্তা দিতে চাইছিল তৃণমূল। বোঝাতে চাইছিল, মমতাই পারবেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে, বিজেপিকে হারাতে। কংগ্রেস যেটা করতে অপারগ। বস্তুত, ভবানীপুরের ফলাফলে সেটাই প্রমাণিত হল।
তাছাড়া, ভবানীপুরে মমতা শুধু বাঙালিদের ভোটে জিতলেন, তাই নয়। সেই সঙ্গে হিন্দিভাষী অধ্যুষিত এলাকাতেও লিড পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। হিন্দিভাষী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে (Priyanka Tibrewal) ভবানীপুরের হিন্দি বলয়েই ধরাশায়ী করে তৃণমূল নেত্রী বুঝিয়ে দিলেন, হিন্দিভাষীদের কাছেও তিনি অচ্যুত নন। অর্থাৎ, জাতীয় স্তরে হিন্দি বলয়ও তাঁকে গ্রহণ করতে পারে।
২০২১ নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর থেকেই বিরোধী শিবিরের নেত্রী হিসাবে অনেকে মমতাকে দেখতে শুরু করেছেন। ভবানীপুরে মমতার বিপুল জয়ের পর জাতীয় স্তরে তৃণমূল নেত্রীর গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে। তাছাড়া, যেভাবে অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav), এম কে স্ট্যালিনরা (MK Stalin) খুশিতে ডগমগ হয়ে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাতে স্পষ্ট, আগামী দিনে মমতার গুরুত্ব জাতীয় স্তরে আরও বাড়বে। আর এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে কংগ্রেস। এমনিতেই সুস্মিতা দেব, লুইজিনহো ফ্যালেরিওদের মতো কংগ্রেস নেতারাও দল ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। আগামী দিনে এই তালিকায় আরও বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। দলে এই ভাঙনের পাশাপাশি যদি জোটসঙ্গীরাও এরপর একে একে মমতার হাত ধরা শুরু করে, তাহলে হাত শিবিরের চিন্তা যে বাড়বে, তাতে সংশয় কী?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.