ছবি: প্রতীকী
শুভঙ্কর বসু: অসমের ঘটনার জের। এবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের (EVM) নিরাপত্তা নিয়ে আরও কড়াকড়ি করছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সর্বত্র ইভিএমের নিরাপত্তা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার থেকে ভোট কেন্দ্র, সেখান থেকে প্রতিটি ইভিএম স্ট্রং রুমে পৌঁছনো ইস্তক জেলার নির্বাচনী প্রধান বা ডিইও এবং রিটার্নিং অফিসারদের সর্বক্ষণের নজরদারি রাখতে হবে বলে সূত্রের খবর।
গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার ভোটের পর অসমে এক বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি থেকে ভোট হওয়া ইভিএমের হদিশ পাওয়া যায়। তুমুল বিতর্কের মধ্যে কমিশনের তরফে বিবৃতি জারি করে সংশ্লিষ্ট বুথের প্রিসাইডিং অফিসার এবং তিন ভোট আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়। এই ঘটনার জেরে এবার ইভিএমের নিরাপত্তা নিয়ে আরও কড়া কমিশন।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ইভিএম কমিশনের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বৈদ্যুতিন এই ভোটযন্ত্র বাতিল করে ফের ব্যালটে ভোট ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। পাশাপাশি ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও একাধিক মহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সেসব অবশ্য পাত্তা না দিয়ে ইভিএমকে আগেই ক্লিনচিট দিয়েছে কমিশন। কিন্তু অসমের ঘটনা নতুন করে বিতর্কে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে।
নিরাপত্তার মোড়ক কেমন হবে?
সূত্রের খবর, ডিসট্রিবিউশন সেন্টার থেকে যে গাড়িতে ভোটকেন্দ্রে ইভিএম যাবে তাতে বাধ্যতামূলকভাবে জিপিএস থাকতে হবে। প্রতি গাড়ি পিছু নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা অন্তত দু’জন করে বাড়াতে হবে। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সামনে গাড়িগুলি সিল করতে হবে। ইভিএম পৌঁছনোর পর ফের রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সামনেই তা খুলতে হবে। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। ভোট হয়ে গেলে একইভাবে কড়া নিরাপত্তায় স্ট্রং রুমে ইভিএম পৌঁছতে হবে। স্ট্রং রুমে ২৪ ঘণ্টা আর্মড পুলিশ দিয়ে প্রহরার ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্ট্রং রুম সিল করার আগে গোটা প্রক্রিয়াকরণ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের বুঝিয়ে দিতে হবে। চাইলে স্ট্রং রুমের তালায় নিজেদের প্রতীকসহ সিল ব্যবহার করতে পারবে রাজনৈতিক দলগুলি।
এ ছাড়াও স্ট্রং রুমে সর্বক্ষণ সিসিটিভির নজরদারি রাখতে হবে। ইভিএম স্ট্রং রুমে বন্দি হওয়া পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে ও তা ডিইওদের নিজেদের হেফাজতে রেখে দিতে হবে। সর্বোপরি জেলা মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক অর্থাৎ জেলাশাসককে স্ট্রং রুমে প্রতিক্ষণ নজরদারি করতে হবে বলে কমিশনের নির্দেশ। রাজ্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক দপ্তরের এক কর্তার কথায়, এমনিতেই ইভিএমের রক্ষণাবেক্ষণ, সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আয়োজন থাকে। কিন্তু অসমের ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে আর কোনওরকম বিতর্ক চাইছে না কমিশন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.