ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফহিম খানের বাড়িতে বুলডোজার চালিয়ে বিপাকে নাগপুর পুরসভা। সুপ্রিম নির্দেশ অমান্য করে এই অভিযানের জেরে হাই কোর্টে তোপের মুখে পড়ল পুরসভা। নাগপুর পুরসভার প্রধান অভিজিৎ চৌধুরী আদালতকে জানালেন, ক্ষমা করবেন সুপ্রিম কোর্টের বিধিনিষেধের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না।
মোগলসম্রাট ঔরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিতে গত মাসে উত্তাল হয়ে উঠেছিল মহারাষ্ট্র। গত ১৭ মার্চ অশান্তি চরম আকার নেয় নাগপুরে। গুজব ছড়ায়, ওই বিক্ষোভে একটি বিশেষ ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই গুজব মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ আকার নেয়। ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। পুলিশের উপর হামলা চালানোর পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া হয় একের পর এক গাড়ি। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফাহিম খান। তাঁর কারণেই গুজব ও উসকানি ছড়ায় ১৭ মার্চ, যা গোষ্ঠী হিংসার আকার নেয় নাগপুর শহরে। যার ফলে আহত হন বহু মানুষ। এমডিপির সভাপতি ফাহিম খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পরই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নীতি অবলম্বন করে যশোধরা নগরের সঞ্জয় বাগ কলোনিতে ফহিমের বাড়িতে বুলডোজার চালায় পুরসভা।
এই ঘটনার জেরেই মামলা দায়ের হয় বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চে। অভিযোগ করা হয়, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ওই বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়ি ভাঙার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিধিনিষেধ মানা হয়নি। এমনকী বাড়ি ভাঙার আগে কোনও নির্দেশিকাও দেয়নি প্রশাসন। এই মামলার প্রেক্ষিতে পুরসভার আধিকারিক অভিজিৎ চৌধুরী আদালতকে হলফনামা দিয়ে জানান, ‘বুলডোজার অভিযানের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল সে বিষয়ে অবগত ছিলাম না। রাজ্যের বস্তি সংক্রান্ত আইন মেনে ২১ মার্চ তদন্তের পর ২৩ মার্চ নোটিস দেওয়া হয়েছিল অভিযুক্তের বাড়িতে। এর পর ২৪ মার্চ ওই বাড়ি ভাঙা হয়। এই বিষয়ে যে শীর্ষ আদালতের কোনও নয়া নির্দেশ রয়েছে, ক্ষমা করবেন এই বিষয়ে আমরা জানতাম না। মহারাষ্ট্র সরকারের তরফেও এমন কোনও নির্দেশিকা আমাদের দেওয়া হয়নি। তবে আপনাদের আশ্বস্ত করছি আগামী দিনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করা হবে।’
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রের কোপে পড়লেই বুলডোজার অ্যাকশন। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের এই নীতি বারবার আদালতের তোপের মুখে পড়েছে। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, রাজ্য প্রশাসনের কোনও অধিকার নেই বিচারকের ভূমিকায় বসে অভিযুক্তর বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগেই বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার। এইসঙ্গে শীর্ষ আদালত বেআইনি ও দখলীকৃত নির্মাণ ধ্বংসের ক্ষেত্রে গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছিল। জানানো হয়েছিল, বাড়ি ভাঙার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে নোটিস দিতে হবে। করতে হবে ভিডিও রেকর্ডিং। তবে কার্যক্ষেত্রে সেই গাইডলাইন মানেনি নাগপুর পুরসভা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.