সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাফালে মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই রাহুল গান্ধীকে একযোগে আক্রমণ বিজেপি শীর্ষ নেতাদের। একই সুরে রাহুলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে অমিত শাহর। রাফালে নিয়ে গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। রাহুল মিথ্যে কথা বলেছেন, এই রায় মিথ্যেবাদীদের মুখে চপেটাঘাত। অভিযোগ বিজেপি সভাপতির। অমিত শাহ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সেনা এবং দেশের জনতাকে বিভ্রান্ত করে রাফালে চুক্তি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রাহুল। এটা সেনা এবং জনতার অপমান। কংগ্রেস সভাপতির ক্ষমা চাওয়া উচিত।” রাফালে মামলা নিয়ে সুপ্রিম রায়ের পরই সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সত্যের জয় হয়েছে। সব চোর এক জায়গায় হয়ে চৌকিদারকে চোর চোর বললেই জনতা তা মেনে নেবে না।”
শুধু রাহুলকে মিথ্যেবাদী বলেই ক্ষান্ত হননি বিজেপি সভাপতি, সেই সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতির উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি প্রশ্নও ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। অমিতের প্রশ্ন,
১. এতদিন ধরে গোটা দেশের কাছে রাফালে নিয়ে বিভিন্ন রকমের ভ্রান্ত তথ্য পেশ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি, সেই তথ্যের উৎস কী? কার কাছে থেকে সেই তথ্য পেয়েছেন রাহুল?
২. ২০০৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন ৭ বছরেও রাফালে চুক্তি সম্পন্ন হয়নি কেন? কমিশনের রফা হয়নি বলে আটকে রেখেছিলেন?
৩. এতদিন কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন সমস্ত অস্ত্রচুক্তি বিদেশের সরকারের সঙ্গে হত। যার ফলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা দুর্নীতির সুযোগ পেত। মোদি সরকারই প্রথম সরাসরি বিদেশি কোনও সরকারের সঙ্গে চুক্তি করল। ৭০ বছরে কংগ্রেস সরকার কেন সরকারের সঙ্গে চুক্তি করল না?
৪. রাফালে নিয়ে রাহুল যদি সত্যিই কোনও দুর্নীতির তথ্য জেনে থাকেন তাহলে নিজে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা কেন করলেন না? কেনই বা আদালতে গিয়ে তাঁর হাতে থাকা গোপন নথি জমা দিলেন না?
এছাড়াও একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সভাপতি। তিনি রাহুলকে চ্যালেঞ্জ করেন সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে। যদিও, কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্ব-বিরোধী বলে দাবি করেছে। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা এবং রণদীপ সূরজেওয়ালা জানান, আদালত সমস্ত নথি না খতিয়েই রায় দিয়েছে। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মূল সারাংশ খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে নিরাপত্তার খাতিরে সর্বোচ্চ আদালত সরকারি সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। তাঁর মানেই সরকারকে ক্লিনচিট দেওয়া নয়। কংগ্রেসের তরফে সরকারের কাছে পালটা তিনিট প্রশ্ন রাখা হয়েছে।
১. যদি ইউপিএ আমলের চুক্তির শর্ত মেনেই নতুন চুক্তি হয়, তাহলে যুদ্ধবিমানের দাম ৩ গুণ বেশি কেন?
২. কেন অনভিজ্ঞ, ঋণে জর্জরিত সংস্থা বরাত পেল, ৭০ বছরের অভিজ্ঞ HAL কেন পেল না?
৩. কেন নরেন্দ্র মোদি সরকারি গাইডলাইন ভেঙে বিক্রয়কারী সংস্থা দাসাল্টকে বাধ্য করল রিলায়েন্সকে বরাত দেওয়ার জন্য?
কংগ্রেসের এই পালটা আক্রমণের মনোভাব থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সুপ্রিম রায়ের পরও রাফালে ইস্যুতে তাঁরা হাল ছাড়তে নারাজ। লোকসভার আগে যেনতেন প্রকারেণ মোদি সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করায় তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.