সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি করে ব্রিটেনে পালিয়ে যাওয়ার দায়ে অভিযুক্ত বিজয় মাল্য, নীরব মোদির ভারতে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে কী বলেন বরিস জনসন (Boris Johnson), কৌতূহল ছিল দেশবাসীর। দুই শিল্পপতিকে বিচারের জন্য কি ভারতের হাতে তুলে দেবে ব্রিটেন, নানা মহলের প্রশ্ন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকের পর ২ দিনের ভারত সফরে আসা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে জানালেন, ব্রিটেন প্রশাসন দুই অভিযুক্ত ভারতীয় শিল্পপতিকে প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। ”আমরা চাই, ওঁদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক”, বলেন জনসন।
হিরে ব্যবসায়ী নীরব বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার পরই ২০১৮য় স্ত্রী অ্যামির সঙ্গে ভারত ছাড়েন। বছরখানেক পর তিনি গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ কারাগারে রয়েছেন। সেখান থেকেই ভারতের প্রত্যর্পণ ঠেকানোর আইনি লড়াই চালাচ্ছেন। অধুনাবিলুপ্ত কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক লিকার ব্যারন মাল্য ভারতে ওয়ান্টেড বিপুল ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে। কিন্তু তাঁরা দুজনে কী করে দিব্যি ব্রিটেনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, প্রশ্নটি ক্ষোভের ঝড় তুলেছে ভারতে। ২০১৯-এই তত্কালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রসচিব সাজিদ জাভেদ ভারতে ওয়ান্টেড লোকজনের প্রত্যর্পণের আদেশে সই করেন।
নানা টেকনিক্যাল বিষয়ের জন্য তাঁদের ভারতে পাঠানোর বিষয়টি খুব জটিল হয়ে উঠেছে, জনসন স্বীকার করেও বলেন, ব্রিটিশ সরকার দুজনের প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। আমরা চাই বিচারের জন্য ভারতে পাঠানো হোক ওঁদের। এটাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, এখন পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই যে, ভারতে আইনের হাত থেকে বাঁচতে যারা আমাদের আইনি সিস্টেমকে কাজে লাগাতে চায়, তারা আমাদের দেশে স্বাগত নয়। ব্রিটেনে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদীরাও। কিন্তু জনসন বলছেন, আমরা ভারতকে ওদের ব্যাপারে সাহায্য করতে একটি সন্ত্রাসবাদ বিরোধী টাস্ক ফোর্স গড়েছি।
মোদি-জনসন বৈঠকের আগে বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানান, ভারতের তরফে জানানো প্রত্যর্পণের আবেদন মাথায় রেখেছেন জনসন। শ্রিংলা বলেন, আর্থিক অপরাধীদের ব্যাপারে কিছুদিন ধরেই ব্রিটেনের সঙ্গে নানা স্তরে কথা চলছে আমাদের। ভারতে ওয়ান্টেড পলাতক আর্থিক অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে দেশে ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বিষয়টি উঠেছে।
গতকালই বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পলাতক আর্থিক অপরাধীদের ন্যয়বিচারের প্রয়োজনীয়তা ও ভারত-বিরোধী মনোভাব পোষণকারী লোকজনের জন্য নিরাপত্তাসংক্রান্ত যে বিপদ মাথাচাড়া দিতে পারে, সে ব্যাপারে লাগাতার ভারত সরব। জনসনের সফরে কতটা প্রতিশ্রুতি আদায় করতে সফল হয় নয়াদিল্লি, জল্পনা ছিল তা নিয়ে। গত বছরই ভারতে আসার কথা ছিল জনসনের। কোভিড পরিস্থিতির জন্য সফর স্থগিত রাখতে হয় তাঁকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.