সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ইজম’ বা মতবাদ রক্তে প্রবাহিত হয় না। তেমনই সন্ত্রাসবাদও বংশপরম্পরা নয়। সমস্তটাই নির্ভর করে পারিপার্শ্বিক ও পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর। এমনটাই প্রমাণ করলেন সংসদ হামলায় ফাঁসি হওয়া জঙ্গি আফজল গুরুর ছেলে গালিব। আধার কার্ড হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত বছর ১৮-র ওই পড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘এবার পাসপোর্ট হাতে পেলেই নিজেকে একজন গর্বিত ভারতবাসী হিসেবে পরিচয় দিতে পারব।’
[সাতসকালে বড় সাফল্য সেনার, কাশ্মীরে গুলির লড়াইয়ে নিকেশ জঙ্গি]
বন্দুক নয়, ভবিষ্যতে জীবনের লড়াই লড়তে কলমকেই হাতিয়ার করেছেন গালিব। তবে অতীত যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না তাঁর। তবে এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তিনি। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে দেখতে চান গালিব। ‘NEET’ বা মেডিক্যাল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। দেশের প্রথমসারির মেডিক্যাল কলেজে জায়গা পেতে বদ্ধপরিকর তিনি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই পড়ুয়া জানিয়েছেন, NEET-এ মনমতো কলেজে না পেলে তুরস্কে ডাক্তারি পড়তে যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। সেখানে বৃত্তি পেলে তাঁর পড়াশোনার আর কোনও সমস্যা থাকবে না। সেনাবাহিনী নিয়ে প্রশ্ন করা হলে গালিব জানান, কোনওদিনও সেনা তাঁদের উপর কোনও অত্যাচার করেনি। উলটে যখনই কোনও জওয়ানের সঙ্গে কথা হয়েছে পড়াশোনার বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহ পেয়েছেন তিনি।পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন জওয়ানরা। বাবার মৃত্যুর পর কাশ্মীরের গুলশনাবাদে দাদু-দিদার সঙ্গে মাকে নিয়ে থাকেন গালিব। সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দাদু গুলাম মহম্মদ ও মা তবসসুম।
তা কীভাবে উত্তপ্ত উপত্যকায় সন্ত্রাসের পথ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখলেন গালিব?
গালিব জানান, অতীতের ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। একসময় নিজে ডাক্তার হতে চেয়েছিল তাঁর বাবা আফজল গুরু। তবে পরিস্থিতির চাপে তা আর হয়ে উঠেনি। ফলে বাবার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করবেন তিনি। সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে গালিব জানান, তাঁকে কোনওদিন বিপথে যেতে দেয়নি তাঁর মা।সবসময় অতীতের আঁচ থেকে তাঁকে আলাদা করে রেখেছেন তবসসুম। পাক মদতপুষ্ট জেহাদি সংগঠনগুলি যুবকদের মগজধোলাই করলেও নিজের ছেলেকে বিপথে যেতে দেননি তিনি। তাই আজ সন্ত্রাস নয় শিক্ষাকেই বেছে নিয়েছেন গালিব। নিজেকে একজন গর্বিত ভারতীয় হিসেবেই ভাবেন তিনি।ভারতীয় পাসপোর্ট হাতে পেলে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারবেন বলেও আশা রয়েছে আফজলপুত্রের মনে। সব মিলিয়ে অতীতের বিভীষিকা কাটিয়ে আজ যুবপ্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন গালিব।
[হামলার আগে বালাকোটে সক্রিয় ছিল ৩০০টি মোবাইল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.