সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। পেগাসাস (Pegasus) ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে চাইছে না সরকার। কিন্তু সরকারকে জানাতে হবে, যে অস্ত্র দেশদ্রোহী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, তা গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপরে প্রয়োগ করা হল কেন। কেন প্রধানমন্ত্রী এভাবে ফোনের মধ্যে ‘অস্ত্র’ ঢুকিয়ে দিলেন। বুধবার দুপুরে বিরোধীদের বৈঠকের পরে এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। কেবল তিনিই নন অন্য বিরোধী নেতাদেরও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল পেগাসাস ইস্যু নিয়ে।
সংসদের চলতি বাদল অধিবেশনে অব্যাহত পেগাসাস বিতর্ক। একে হাতিয়ার করেই অধিবেশনের বাকি দিনগুলোয় কেন্দ্রকে চাপে রাখার কৌশল স্থির করছে ১৮ বিরোধী দল (Opposition parties)। বুধবার অধিবেশন শুরুর আগে অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছে সংসদে পেগাসাস নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না। কিন্তু কেন এই নিয়ে আলোচনা করতে দেওয়া হবে না? সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমরা সংসদ চালাতে দিচ্ছি না। কথাটা সত্যি নয়। আমরা মোটেই তা করছি না। আমরা আমাদের দায়িত্বই পালন করছি। এই যে অস্ত্র তা দেশদ্রোহী, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত ছিল। আমি অমিত শাহ (Amit Shah), নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) জিজ্ঞেস করতে চাইছি তাঁরা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রকে ব্যবহার করলেন কেন?’’
তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমরা কেবল জানতে চাই সরকার পেগাসাস কিনেছিল কিনা। ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’-এ উত্তর দিক সরকার। যদি উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে এটা জানাক কাদের কাদের উপরে তা প্রয়োগ করা হয়েছে।’’ অভিযোগ উঠেছে, পেগাসাস নিয়েই বিরোধীদের লাগাতার বিরোধিতায় সংসদের অন্যান্য কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। এপ্রসঙ্গে রাহুলের দাবি, ‘‘যদি আমরা এখন পেগাসাস নিয়ে আলোচনা স্থগিত রেখে অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে পেগাসাস নিয়ে আলোচনা আর হবেই না। কিন্তু এভাবে গণতন্ত্রের উপরে আঘাত হানার পরে এই নিয়ে আলোচনা জরুরি হয়ে পড়েছে।’’
প্রসঙ্গত, লোকসভা ও রাজ্যসভার সংসদীয় দলনেতাদের এই বৈঠকে অবশ্য তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। এদিকে বৈঠকে রাহুল গান্ধী ছাড়াও কংগ্রেসের তরফে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ। এছাড়া জেডিইউ, সিপিআই নেতারাও ছিলেন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারও বিরোধী দলগুলির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। কিন্তু বুধবারের বৈঠক তাঁদের কাউকেই দেখা যায়নি।
এদিকে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র রাহুলের বৈঠকের পরই সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে জানান, ‘‘সংসদে কোনও বিষয়ই আলোচনা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা দেশের সঙ্গে, দেশের জনতার সঙ্গে প্রতারণা। এই মুহূর্তে করোনার মোকাবিলা কিংবা টিকাকরণ নিয়ে আলোচনাই প্রাধান্যই পাওয়া উচিত। কিন্তু তা না করে বিরোধীরা এই বিষয় নিয়েই কথা বলে চলেছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.