সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এরাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Jagdeep Dhankar) উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে রীতিমতো চমক দিয়েছে বিজেপি। উপরাষ্ট্রপতি পদে সম্ভাব্য যে কয়েকটি নাম প্রকাশ্যে ভেসে আসছিল, তাতে ছিল না ধনকড়ের নাম। তাহলে শেষবেলায় কোন অঙ্কে ধনকড়কে বাছা হল এই পদের প্রার্থী হিসাবে? আসলে এখন থেকেই ২০২৪ লোকসভার (2024 Lok Sabha) অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে একাধিক রাজ্যের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের অঙ্কও গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতাদের মাথায় রয়েছে।
১। জাঠ কৃষকপুত্র: জগদীপ ধনকড় পেশায় আইনজীবী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেও তাঁর আরেকটি পরিচয় আছে। তিনি জাঠ কৃষক পরিবারের সন্তান। ধনকড়ের এই পরিচয়টিই মূলত তুলে ধরার চেষ্টা করছে বিজেপি। যে জাঠরা বিজেপির কোর ভোটব্যাংকের অংশ ছিল, কৃষি আইন পাশ হওয়ার পর তাদের একটা বড় অংশ গেরুয়া শিবিরের উপর থেকে ভরসা হারিয়েছে। কেন্দ্র ওই আইনটি প্রত্যাহার করলেও জাঠদের ক্ষোভ কমেনি। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) আসন বাড়ার পিছনেও এই জাঠদের ক্ষোভের বড় অবদান আছে। সেই ক্ষোভ প্রশমনে ধনকড়কে হাতিয়ার করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আসলে এই মুহূর্তে কোনও জাঠ নেতা বিজেপিতে বড় কোনও পদে নেই। অথচ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে জাঠরা নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে। তাই লোকসভার আগে এক জাঠ সন্তানকে বড় পদে তুলে আনার পরিকল্পনা নিয়েছেন মোদি-শাহরা।
২। রাজস্থানের ভূমিপুত্র: ধনকড় জাঠ সন্তান হওয়ার পাশাপাশি রাজস্থানের ভূমিপুত্র। ঘটনাচক্রে স্পিকার ওম বিড়লাও (Om Birla) রাজস্থানের বাসিন্দা। সম্ভবত এই প্রথমবার লোকসভা এবং রাজ্যসভা, সংসদের এই দুই কক্ষই চালাবেন একই রাজ্যের ভূমিপুত্ররা। যা আগামী বছর রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ডিভিডেন্ট দিতে পারে।
৩। বাংলার রাজ্যপাল: ধনকড় প্রায় ৩ বছর বাংলার রাজ্যপাল ছিলেন। রাজ্যপাল পদে থাকাকালীন তিনি যতই শাসকদলের চক্ষুশূল হয়ে উঠুন না কেন, বিরোধীদের কাছে তিনি ভরসার জায়গা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। তাছাড়া ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগে নিজের উদ্যোগে তিনি যেভাবে বাংলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাতে ধনকড় উপরাষ্ট্রপতির মতো পদ পেলে বাংলাতেও বিজেপি (BJP) কিছুটা সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির।
৪। পিপলস গভর্নর: জগদীপ ধনকড় বাংলার রাজ্যপাল হওয়ার পর এরাজ্যে তাঁর ভাবমূর্তি যেমনই হোক না কেন, রাজ্যের বাইরে বিজেপি তাঁকে ‘পিপলস গভর্নর’ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। ধনকড়ের এই ‘ভাল মানুষ’ ভাবমূর্তিকে জাতীয় স্তরে কাজে লাগাতে চায় গেরুয়া শিবির। বোঝাতে চায় বিজেপিতে ভাল কাজ করলে তার পুরস্কার পাওয়া যায়, সেটাও ধনকড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার অন্যতম কারণ।
৫। সংবিধানের জ্ঞান: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) নিজে ধনকড়কে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বলেছেন, সংবিধান সম্পর্কে তাঁর অগাধ জ্ঞান। কথাটা সত্যি। ধনকড় রাজনীতিতে নামার আগে নিজেকে আইনজীবী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। হিন্দি, ইংরাজি দুটি ভাষাতেই তাঁর দখল আছে। এবং সংবিধান সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞান আছে তাঁর। যা আগামীদিনে রাজ্যসভা চালাতে সহায়ক হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.