Advertisement
Advertisement
এনআরসি মূল মামলাকারী

‘অসমীয়ারা শেষ হয়ে গেল’, তালিকা দেখে চরম হতাশ এনআরসির মূল কারিগর

রাজ্যকে বিদেশিমুক্ত করার জন্য ১০ বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের নায়ক অভিজিৎ শর্মা।

'Very upset with NRC list', expresses NRC petitioner Abhijit Sharma
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 31, 2019 4:49 pm
  • Updated:August 31, 2019 7:17 pm  

মনিশংকর চৌধুরি, গুয়াহাটি: দীর্ঘ ১০বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই। যার ফল একেবারেই সন্তোষজনক হল না এনআরসি’র মূল মামলাকারীর কাছে। শনিবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর তাই তাঁকে আক্ষেপ করতে শোনা গেল, ‘অসম জাতিটা শেষ হয়ে গেল। মাথা তুলে আর দাঁড়াতে পারব না।এতজন শহিদের বলিদান ব্যর্থ হয়ে গেল।’ তিনি অভিজিৎ শর্মা, এনআরসি’র নেপথ্য নায়ক। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের হতাশা, আক্ষেপের কথা চেপে রাখতে পারলেন না।

[আরও পড়ুন: এনআরসি তালিকায় নাম নেই, ‘বিদেশি’ চিহ্নিত কারগিল যোদ্ধা সানাউল্লাহ]

অভিজিৎ শর্মা অসম পাবলিক ওয়ার্কস কমিটির প্রধান। কিন্তু এটা তাঁর একটা পরিচয়মাত্র। অভিজিৎবাবুকে অসমে সকলে চেনেন এনআরসি’র মামলাকারী হিসেবেই। লড়াইটা শুরু করেছিলেন বছর দশেক আগে। অসমকে বিদেশিমুক্ত করতে হবে, এই লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাওয়া গুয়াহাটির ভুঁইঞা দম্পতির ইচ্ছার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। তিনিই প্রথম এনআরসি’র দাবি তুলে মামলা দায়ের করেন। আর ১০ বছর ধরে সেই আইনি লড়াইয়ের সমস্ত ব্যয়ভার বহন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে দম্পতি প্রদীপ ভুঁইঞা, বন্তী ভুঁইঞা। অসমীয়াদের জাত্যাভিমান ধরে রাখতে এনআরসি তালিকাই ছিল শেষ ভরসা। যে কাজ চলেছে প্রায় ৬ বছর ধরে। তারও আগের একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে এ নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণের কর্মকাণ্ড চলেছে।
তবে শনিবার, সেই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর এতদিনের লড়াই ব্যর্থ বলে মনে করছেন মূল মামলাকারী অভিজিৎ শর্মা। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিজিৎবাবু স্পষ্টই জানালেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ স্বচ্ছভাবে হয়নি। দুর্নীতি হয়েছে এই কাজে। নাহলে ১৯ লক্ষের নাম বাদ যেত না।
হিসেব বলছে, তালিকা থেকে বাদ যাওয়া এই ১৯ লক্ষের মধ্যে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ এনআরসি তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদনই করেননি। তা বাদ দিলে ১৬ লক্ষ মানুষের মধ্যে অধিকাংশ আবার উপজাতি সম্প্রদায়, অসমের ভূমিপুত্র। এই ভাগাভাগির অঙ্কে প্রকৃত অসমীয়াদের বড় অংশই বাদ পড়েছেন বলে মনে করছেন অভিজিৎবাবু।

Advertisement

[আরও পড়ুন: এনআরসি তালিকা থেকে বাদ ১৯ লক্ষ মানুষ, ‘নিজভূমে পরবাসী’দের ভবিষ্যৎ কী?]

তাহলে এরপর কী করবেন? ব্যর্থতার দায় নিয়ে হতাশায় ডুবে যাবেন নাকি আবারও নতুন করে লড়াই শুরু করবেন। এই প্রশ্নের উত্তরে এনআরসি’র মূল কারিগর একেবারে অনড় মনোভাব নিয়েই জানালেন, তালিকা পুনর্বিবেচনার জন্য হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। এর শেষ দেখেই ছাড়বেন। অসমীয়াদের লড়াই, এতজন ভাষা শহিদের আত্মবলিদান একটা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার ফলে এভাবে বিফলে যেতে দিতে নারাজ
অভিজিৎ শর্মা। এই লড়াইয়ে অভিজিৎবাবুকে যাঁরা অর্থসাহায্য করেছেন, সেই ভুঁইঞা দম্পতি কিন্তু খুশি। আর এতে আরও বিস্মিত অভিজিৎবাবু। তিনি ভেবে পাচ্ছে না, যেখানে জাতির লড়াইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যুতে এত ফাঁকফোকর ধরা পড়ছে, সেখানে খুশি হওয়া যায় কীভাবে। আর এখানেই এতদিনের সহযোদ্ধাদের পথ পৃথক হয়ে গিয়েছে। এখন অভিজিৎবাবুর নতুন সংগ্রাম শুরু হবে, সম্ভবত তা একক লড়াই।

দেখুন ভিডিও: 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement