দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে শিলংয়ে পাঁচদিন কথা বলার পর মুখবন্ধ খামে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে যে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছিল তা পড়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের মন্তব্য, রিপোর্টে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ‘গুরুতর’। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি চলাকালীন সিবিআইকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই মতোই এদিন হলফনামা পেশ করে সিবিআই।
হলফনামায় সিবিআই দাবি করেছে, চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্তে সিট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থার দেওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে ফারাক। বেশ কিছু কল রেকর্ড পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে ৪টি মোবাইল নম্বরের কল রেকর্ড আংশিক মুছে দেওয়া হয়। সিবিআইয়ের দাবি, ওই রেকর্ড বারবার চাওয়ার পরেও তাদের হাতে দেয়নি সিট। সিবিআইয়ের অভিযোগ এই চারটি কল রেকর্ডের কোনওটির ১১ মাস, কোনওটির ১০ মাসের কল রেকর্ড নেই। এই সমস্ত বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি জানতে চান শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জেরা করে যা পাওয়া গিয়েছে সেই তথ্য কোথায়? প্রশ্নের জবাবেই এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী একটি হলুদ খামে সেই জেরার স্টেটাস রিপোর্ট তুলে দেন আদালতের কাছে। সেই রিপোর্ট পড়ার পরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই রিপোর্টে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা অত্যন্ত গুরুতর।”
রাজ্য সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আগেই করেছিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ ছিল, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ও পুলিশ তাদের সহযোগিতা করছে না, যা আদালত অবমাননার সমান। আদালত অবমাননা এবং প্রমাণ লোপাট এই অভিযোগে দু’টি মামলা দায়ের করে সিবিআই। সিবিআইয়ের তরফে কিছু গোপন আবেদন রাখা হয়েছে শীর্ষ আদালতের কাছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আগামী দশ দিনের মধ্যে রাজীব কুমারকে জেরায় যে তথ্য উঠে এসেছে সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিবিআই কি করতে চায় সেই বিষয়ে আবেদন জানাক এবং সিবিআইয়ের আবেদনের সাতদিনের মধ্যে তার উত্তর দিতে হবে রাজীব কুমারকে।
তিন সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তারা আবদেন জমা করা দেবে। এদিন রাজ্যের তরফে আইনজীবীর দাবি ছিল, অবমাননার মামলা থেকে বাদ দেওয়া হোক রাজ্যের ডিজিপি ও মুখ্য সচিবকে। আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে এই দুই মামলা একসাথেই চলবে এবং এখনই কাউকে ছাড়া হবে না এই মামলা থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.