সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইক বা গাড়িতে চিকিৎসক, আর্মি, উকিল লেখা স্টিকার হামেশাই নজরে পড়ে। এক্ষেত্রে পেশাগত বাধ্যবাধকতার চাইতে স্ট্যাটাস প্রদর্শনই প্রধান উদ্দেশ্য বলে কটাক্ষ করেন নিন্দুকেরা। কিন্তু নিজের জাত লেখা স্টিকার বসিয়ে বংশমর্যাদা প্রদর্শন করা হয় শুনলে অবাক হবার কিছু নেই। এমনটা উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) জলভাত। তাই এহেন বিদ্বেষপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক প্রথায় ইতি টানতে গাড়ি বা মোটরসাইকেলে জাত লেখা স্টিকার সাঁটিয়ে দেমাক দেখাতে গেলেই বাজেয়াপ্ত হবে বাহন।
অভিযোগ, সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন যখন মুলায়ম সিং যাদব ক্ষমতায় ছিলেন সেই ২০০৩-০৭ সালে গাড়িতে জাতপাতের উল্লেখ করা স্টিকার সাঁটা তুমুল জনপ্রিয় হয়। গাড়ি আর বাইকে যাদব লেখা স্টিকার স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে ওঠে। এছাড়া, যাদব, জাঠ, গুর্জর, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়- এমনই আত্মপরিচয় প্রচার করা স্টিকার লাগানো থাকে গাড়িতে। এতে সামাজিক প্রতিপত্তি যেমন বোঝা যায়, তেমনই জানা যায় রাজনৈতিক দিক থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কতটা মর্যাদা। কিন্তু যোগী রাজ্য এবার জানিয়ে দিয়েছে, জাতপাত নিয়ে আত্মম্ভরিতা ছড়ানোর এই পন্থা তারা আর মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের নির্দেশে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর জাতের স্টিকার লাগানো গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। এই মর্মে সমস্ত রিজিয়নাল ট্রান্সপোর্ট অফিসগুলির উদ্দেশে গত ২৪ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন অ্যাডিশনাল ট্রান্সপোর্ট কমিশনার মুকেশ চন্দ্র।
এতদিন পর এই সিদ্ধান্ত কেন? গাড়িতে জাতপাত উল্লেখ করা স্টিকার বন্ধের আরজি জানিয়ে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি চিঠি লেখেন মহারাষ্ট্রের কল্যাণের বাসিন্দা হর্ষল প্রভু। নালিশ জানানোর জন্য তৈরি সিস্টেম IGRS-এর মাধ্যমে পেশায় শিক্ষক প্রভু লেখেন, “এহেন বৈষম্যমূলক স্টিকার সমাজে গঠনতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী। আমি শীঘ্রই এহেন স্টিকার লাগানোর প্রথা বন্ধের আরজি জানাচ্ছি।” এই চিঠি পাওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর অফিস সেই চিঠি উত্তর প্রদেশ সরকারকে পাঠিয়ে দেয়। পরিবহণ দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার ডিকে ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, এ ধরনের স্টিকার আর গাড়িতে লাগানো চলবে না। যাঁরা এই কাজ করবেন তাঁদের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে। রাজ্য এনফোর্সমেন্ট টিম জানিয়েছে, প্রতি ২০টি গাড়ি পিছু একটি গাড়িতে এ ধরনের স্টিকার দেখা গিয়েছে। সদর দপ্তর নির্দেশ দিয়েছে, এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.