বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর অবস্থানের বিরোধিতা করলেন দলের প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি। দলের প্লেনারি অধিবেশনে যোগ দিতে এসে মমতার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি জানান, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দেশের হেভিওয়েট নেতা। তাই বিজেপিকে পরাস্ত করার স্বার্থে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির প্রয়োজন। যেমন প্রয়োজন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি। সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে জোটের পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। সম্প্রতি মেঘালয়ে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন সনিয়া-তনয়। পালটা রাহুলকে তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই পরিস্থিতিতে প্লেনারি অধিবেশনের মধ্য থেকেই রাহুলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা শুরু করলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারা। তৃণমূল ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে রাহুলের বক্তব্য বা অবস্থান যে তাঁরা সমর্থন করেন না শুক্রবার তা প্রকাশ্যেই স্পষ্ট করেন দলের নির্বাচনী জোট কমিটির সদস্য মইলি। এদিন তিনি জানান, বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার ও কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তা আলোচনার মধ্য দিয়ে মিটিয়ে ফেলার প্রয়োজন রয়েছে। কংগ্রেস অবশ্যই জোটের নেতৃত্ব দেবে। কিন্তু এই দেশের রাজনীতিতে এই হেভিওয়েটদের অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য একসঙ্গে হাত ধরাধরি করে কাজ করতে হবে। আর কংগ্রেসের অভ্যন্তর থেকে জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার যে দাবি উঠেছে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তখনই কংগ্রেস নেতৃত্ব দেবে যখন দল শক্তিশালী হবে এবং নেতৃত্ব দেওয়ার মতো আচরণ ও দায়িত্বশীল হবে।
মইলির এই বক্তব্য সম্পূর্ণ রাহুলের রাজনৈতিক অবস্থান ও চিন্তাভাবনার বিপরীত বলে মনে করছে দলের একাংশ। সম্প্রতি মেঘালয়ে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করে রাহুল বলেন, বাংলার শাসকদলের ইতিহাস সম্পর্কে সকলে অবগত। ক্ষমতায় আসার পর থেকে কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে তৃণমূল দল ও সরকার। এছাড়াও গোয়াতে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে বিপুল খরচ করেছে। ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিজেপিকে সাহায্য করতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
রাহুলের এই মন্তব্যে কড়া জবাব দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুলকে তুলোধোনা করে অভিষেক জানান, বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে। অপ্রাসঙ্গিকতা, অপদার্থতা ও নিরাপত্তাহীনতার জেরে তারা বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। টুইটারে অভিষেক লেখেন, “আমি রাহুল গান্ধীকে অনুরোধ করছি, আমাদের আক্রমণ না করে নিজেদের অসার রাজনীতির পর্যালোচনা করুন। আমাদের বৃদ্ধি অর্থের জোরে নয়। মানুষের ভালবাসাই আমাদের চালিত করে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.