সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত রবিবার প্রকৃতির রুদ্র রূপ দেখে কেঁপে ওঠে উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand)। হিমবাহে ভাঙন ধরে দেবভূমির চামোলিতে ধেয়ে এসেছিল বিধ্বংসী হড়পা বান। বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে নানা জল্পনার মাঝে স্থানীয়দের বিশ্বাস, প্রকৃতি নয়, দেবতার কোপেই এই অঘটন।
কেন এমনটা মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা? চামোলি জেলার যে অংশে গত রবিবার এই বিপর্যয় ঘটেছিল, তার ঢিলছোঁড়া দূরত্বে থাকা রেইনি গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস, দৈব নির্দেশেই তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে এই বিপর্যয়। তাঁরা জানান, বহুকাল ধরেই ওই অঞ্চলে একটি মন্দির ছিল। বাঁধ তৈরির সময় সেটি ভেঙে ফেলা হয়। ফলে প্রচণ্ড কূপিত হয়েছেন মন্দিরটির অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কর্মের শাস্তি হিসেবে মৃত্যু ও ধ্বংসের এহেন লীলা দেখিয়েছেন তিনি। ওই এলাকার বয়স্করা জানিয়েছেন, ঋষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গার সঙ্গমে গ্রামের মূল মন্দিরটি রয়েছে। তবে অত্যন্ত দুর্গম স্থান হওয়ায় সেখানে যাওয়া রীতিমতো কঠিন। তাই গ্রামের মাঝেই দেবীর একটি প্রতীকী মন্দির গড়ে তোলেন তাঁরা। সেখানেই দিব্যি পুজো-আচ্চা চলছিল। কিন্তু গতবছর গ্রামবাসীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসন মন্দিরটিকে ভেঙে ফেলে। অন্য জায়গায় মন্দির বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা আজও হয়ে ওঠেনি। আর এতেই নাকি রীতিমতো রেগে গিয়েছেন দেবী।
উল্লেখ্য, হিমবাহ ধসের পর তৃতীয় দিনেও জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, এসডিআরএফ ও অন্যান্য এজেন্সি একজোট হয়ে দুর্গম তপোবন টানেলের মধ্যে ঢুকে আটকে পড়াদের বের করে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২০৬জন আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৩২জনের দেহ। টানেলের মুখ আটকে গিয়েছে পাথর ও বালিতে। তার ফলে সেখানে আটকে রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সন্ধান পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, ১২০ মিটার ভিতরে ঢুকতে সফল হয়েছে উদ্ধারকারী দল। টানেলের ভিতর অক্সিজেনের অভাব অনুভূত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। চামোলি জেলার আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ওই টানেল থেকে যত দ্রুত সম্ভব ধসের কবলে পড়া মানুষগুলিকে বের করে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে চামোলি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ১৩টি গ্রামের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.