নন্দিতা রায়: অসমের পর এবার লখনউ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় উত্তপ্ত লখনউয়ে যাওয়ার অনুমতি পেল না তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজিপি জানিয়ে দিয়েছেন, বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হবে দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে লখনউ পাড়ি দেওয়া তৃণমূলের চার প্রতিনিধিকে। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষুব্ধ বঙ্গের ঘাসফুল শিবির।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা CAA বিরোধিতায় জ্বলছে উত্তরপ্রদেশ। অশান্তির সূত্রপাত গত শুক্রবার। ওইদিনই আন্দোলনের আগুনে জ্বলে ওঠে সাহারানপুর, দেওবাঁধ, শামলি, মুজাফ্ফরনগর, মিরাট, গাজিয়াবাদ, হাপুর, সম্বল, আলিগড়, বাহারাইচ, ফিরোজাবাদ, কানপুর, বাদোহি, গোরক্ষপুর। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ঘটনাস্থলে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছেন অনেকেই। ক্রমশই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বছর আটেকের একটি শিশু-সহ এখনও পর্যন্ত মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও গুলি চালানোর কথা মানতে রাজি নয় পুলিশ। তাদের দাবি, গুলি চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। তবে সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভকারীদের সামাল দিতে গুলি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে তা সত্ত্বেও গুলি চালানোর প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থানে এককাট্টা উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
WATCH: A video that nails the claims of UP Police that it never fired a single bullet! The video is of yesterday from Kanpur. pic.twitter.com/O4RazguIM2
— Prashant Kumar (@scribe_prashant) December 22, 2019
এদিকে, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আপাতত উত্তরপ্রদেশের ২১টি জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারাও।
উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রবিবার লখনউতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, নাদিমুল হক এবং আবিররঞ্জন বিশ্বাসের লখনউতে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁরা নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও স্থির করেছিলেন। কিন্তু লখনউতে যাওয়ার অনুমতি পেলেন না তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ওপি সিং বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি তৃণমূলের কয়েকজন নেতানেত্রী লখনউতে আসছেন। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই অশান্তির আশঙ্কায় কাউকে ওই এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হবে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের।” উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষুব্ধ দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ এবং পুলিশের মধ্যে অশান্তি চলছে উত্তরপ্রদেশে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় মানুষের পাশে রয়েছেন। তাই আমাদের পাঠাচ্ছেন তিনি। আগে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাই তারপর আটকে দিলে দেখা যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.