সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোরস্থানের লাগোয়া জমি। আর সেই জমির মালিক বেশ কয়েকঘর হিন্দু। বেলারিখান গ্রামে নিত্যদিন অশান্তি বাঁধত ওই দু’টুকরো জমি নিয়ে। সীমানা ভুলে হিন্দুর জমিতে কবর দিলেই বেঁধে যেত ঝগড়াঝাঁটি। দু’পক্ষের অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াই মাঝে মধ্যে পৌঁছে যেত হাতাহাতির পর্যায়েও। শেষে কবরস্থান কমিটিকে ওই জমিটুকু উপহার হিসেবেই দিয়ে দিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যারা। যাতে তাঁরা পুরো জমিটাকেই তাঁদের কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
খোদ যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশেই ঘটেছে এই ঘটনা। ফৈজাবাদ জেলার এই ঘটনাটি সামনে এনেছেন সেখানকার এক বিজেপি বিধায়ক ইন্দ্রপ্রতাপ তিওয়ারি। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে জমির এই হাতবদলের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ” দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির জন্যই এই পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকার অশান্তির একমাত্র কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ওই জমি। তাই জমিটি উপহার দিয়ে স্থায়ী সমাধানের পথ বেছে নিয়েছেন এঁরা।”
মোট ন’জন হিন্দুর ১.২৫ বিঘা জমি গত ২০ জুন হাতবদল করা হয় ওই কবরস্থান কমিটিকে। ওই ন’জন হিন্দুর একজন সূর্য্যকুমার ঝিঙ্কন মহারাজ বলেন, “কবর দেওয়া নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। আমরাও বহুবার রেগে গেছি। অনেক খারাপ কথাও হয়তো বলেছি। কিন্তু, ভবিষ্যতে আর এমন হবে না। সব নিয়ম মেনে শর্তপূরণ করে, আইনি পথে আমরা কবরস্থান কমিটিকে ওই জমি দিয়ে দিয়েছি। আমাদের আশা, এই উদ্যোগ থেকে দেশের অন্যপ্রান্তের বাসিন্দারাও অনুপ্রাণিত হবেন।”
সমস্যার এই অভূতপূর্ব সমাধান করতে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়েছিলেন ফৈজাবাদের গোসাইগঞ্জের বিধায়ক ইন্দ্রপ্রতাপ তিওয়ারি। তিনিই ওই জমির মালিকদের জমিটি উপহার হিসেবে করবস্থান কমিটিকে দিতে রাজি করান। এপ্রসঙ্গে তিওয়ারি বলেন, “হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্বের ভাবনাকে বজায় রাখতেই এই উদ্যোগ। প্রয়োজনীয় স্ট্যাম্প ডিউটি এবং বৈধ ডিডের মাধ্যমেই এই জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের তরফে এলাকার ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের এটি উপহার।” অন্যদিকে, গোসাইগঞ্জ জামা মসজিদের প্রধান ইমাম হাজি আবদুল হক বলেন, “এই পদক্ষেপ আরও একবার প্রমাণ করে দিল যে শান্তি ও সম্প্রীতি একসঙ্গে বিরাজ করে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.