সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীর-সহ সমগ্র ভারতে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে ভয়ঙ্কর ছক কষছে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা। গত মাসে আটক হওয়া লস্কর জঙ্গি জইবুল্লাহর কাছ থেকেই সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য হাতে এসেছে গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ-র। তবে দু’টি প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল গোয়েন্দাদের মনে। এক, পাকিস্তান থেকে কোন পথ ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা পর্যন্ত পৌঁছেছিল জইবুল্লাহ ও তার পাঁচ সঙ্গী? দুই, সীমান্তে সেনার কড়া নজর এড়িয়ে কেমন ভাবে উপত্যকার এতটা ভিতরে প্রবেশ করল তারা?
[সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি বাড়াতে নয়া সার্চ ইঞ্জিন আনছে কেন্দ্র]
গত মাসের ২০ মার্চ জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়ায় অভিযান চালিয়ে লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি জইবুল্লাহকে জীবন্ত পাকড়াও করেছিল সেনা। গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছিল তার বাকি পাঁচ সঙ্গীর। এরপর থেকেই তার মুখ খোলানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। লস্করের পরবর্তী পরিকল্পনা জানার পাশাপাশি তদন্তকারী অফিসারদের মনে প্রশ্ন জেগেছিল জঙ্গিদের গতিপথ নিয়ে। সেই গোপন পথই এনআইএ-র গোয়েন্দাদের সামনে ফাঁস করেছে বছর কুড়ির এই জঙ্গি। সে জানায়, প্রথমে একটি টয়োটা কোস্টার গাড়ি করে তাদের মুজফ্ফরাবাদ থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সারওয়ালে। দু’দিনের সেই যাত্রাপথে তাদের সঙ্গে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকটি একে-৪৭ বন্দুক, প্রচুর কার্তুজ, গ্রেনেড ও ভারতীয় মুদ্রায় প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা। খাওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল পাঁচ বোতল মধু, বাদাম ও চাপাটি। নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পৌঁছানোর পরে কাঁটাতার কেটে ভারতে প্রবেশ করে ছয় জঙ্গি। এরপর গোয়েন্দাদের কাছে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করে জঙ্গি জইবুল্লাহ। সে জানায়, যে গাড়িতে করে তারা পাক অধিকৃত কাশ্মীর পর্যন্ত এসেছিল সেটি কাশিম ভাইয়ের। কে কাশিম ভাই? লস্কর-ই-তইবার কমান্ডার তথা মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড জাকিউর রহমান লাকভির ছেলে কাশিম ভাই।
[পনেরো দিনে এক লক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে চার বছরের খতিয়ান শোনাবে বিজেপি]
ভারতে প্রবেশের পর জিপিএস ফলো করে কুপওয়াড়ার জঙ্গলে প্রথম পনোরো দিন আত্মগোপন করেছিল তারা। জইবুল্লাহ জানায়, গত ১২ মার্চ আলতাফ ও বিলা নামে কাশ্মীরের এক লস্কর সদস্যের বাড়িতে গা ঢাকা দেয় তারা। এরপর ১৮ মার্চ সেখান থেকে চলে আসে পাশের গ্রামে। ফতেহ খান নামে অন্য এক লস্কর সদস্যের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে বেশিদিন শান্তিতে থাকতে পারেনি তারা। দু’দিনের মাথায় ওই গ্রামে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় জইবুল্লাহ ও তার পাঁচ সঙ্গীর। লড়াইয়ে পাঁচজন মারা গেলেও প্রাণে বেঁচে যায় জইবুল্লাহ। আটক হয় সেনার হাতে। প্রসঙ্গত, ধৃত এক লস্কর জঙ্গিকে জেরা করে এনআইএ-র হাতে এসেছে এমন কিছু তথ্য যাতে নড়েচড়ে বসেছেন শীর্ষ আধিকারিকরা। সে জানায়, ইতিমধ্যেই জঙ্গি সংগঠনটি তৈরি করে ফেলেছে এক অত্যাধুনিক মোবাইল ফোন। যা ট্র্যাক করা সম্ভবপর হবে না বিশ্বের কোনও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে। ফলে কোন স্থান থেকে ফোন করা হচ্ছে, কী কথা বলা হচ্ছে কোনও তথ্যই জানতে পারবেন না গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.