নন্দিতা রায়,নয়াদিল্লি: দিনভর আলোচনার পরে বুধবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি তথা উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ সংক্রান্ত সংবিধান (১২৪তম) সংশোধনী বিল। মঙ্গলবারই বিলটি লোকসভায় পাস হয়েছিল। বুধবার ১৬৫টি ভোট পেয়ে পাস হয়ে গিয়েছে রাজ্যসভায়ও। বিলটির বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৭টি। সংসদের দুই কক্ষেই পাস হয়ে যাওয়ায় এবার বিলটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে। তিনি সই করে দিলেই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হয়ে যাবে। এর জন্য অর্ধেকের বেশি রাজ্যের বিধানসভা থেকে মঞ্জুরির প্রয়োজন হবে না। বিলটিকে সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে এদিন অধিকাংশ বিরোধীদল আলোচনার সময়ে উল্লেখ করলেও, ভোটাভুটির সময়ে প্রায় সমস্ত রাজনৈতিকদলই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
রাজ্যসভাতে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হয়ে গেলেও নাগরিকত্ব বিলটি ঝুলেই রইল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বিবৃতি দিলেও বিলটি নিয়ে এদিন সরকারের তরফ থেকেও বিশেষ কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সরকারপক্ষের নজর ছিল সংবিধান সংশোধনী বিলের দিকেই। নাগরিকত্ব বিলটিকে রাজ্যসভায় নিয়ে এসে তা জীবিত রাখার কাজটাই আপাতত সেরে রাখল সরকার। চলতি মাসের শেষেই অন্তর্বর্তী বাজেট পেশের জন্য সংসদের বাজেট অধিবেশন বসবে। তখনই সরকার নাগরিকত্ব বিলটি রাজ্যসভায় পাস করানোর চেষ্টা করবে বলেই জানা গিয়েছে।
লোকসভা ভোটের আগে উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইন তৈরি হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুকুটে নতুন পালক যোগ হল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম আর্থিক অবস্থার নিরিখে দেশে সংরক্ষণ চালু হচ্ছে। গত বছরের শেষে দেশের তিন রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরে সেখানকার উচ্চবর্ণের মানুষেরা যে বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে সেকথা ভালোই বুঝতে পারছিল বিজেপি শিবির। তাদের মন জয় করার লক্ষ্যেই এই আইনটি করা হল বলেই মত বিশেষজ্ঞমহলের। লোকসভা ভোটে সংরক্ষণকে বিজেপি প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরবে বলেই সকলে মনে করছে । এদিন বিলটি রাজ্যসভার পাস হওয়ার পরেই একগুচ্ছ টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সংসদের দুই কক্ষেই বিলটি পাস হওয়াকে সামাজিক ন্যায়ের জয় বলে আখ্যা দিয়েছেন মোদি। তিনি লিখেছেন, “অত্যন্ত আনন্দের বিষয় রাজ্যসভা সংবিধান সংশোধনী বিল ২০১৯ পাস করেছে। যেভাবে বিলের সমর্থনে সকলেই এগিয়ে এসেছেন তা অত্যন্ত আনন্দের। সভায় ঝকঝকে বিতর্ক হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সদস্য তাদের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মতামত রেখেছেন। সংসদের দুই কক্ষেই এই বিলটি পাশ সামাজিক ন্যায়ের জয়।”
সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করার মধ্যে দিয়ে সংবিধান যারা তৈরী করেছেন তাদের এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা অর্পণ করা হল বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিলটি পাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ টু্যইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং যারা বিলটি সমর্থন করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.