সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাপ কামড় দিয়েছে স্ত্রীকে। বাঁচাতে স্বামী যা করলেন তার সাক্ষী হতে হয়তো প্রস্তুত ছিলেন না কেউই। কথায় বলে বিশ্বাসে মেলায় বস্তু। আর সেই বিশ্বাসই প্রাণ নিল মহিলার। স্ত্রীকে সাপে ছোবল মারায় তাঁকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন ব্যক্তি। তবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে নয়, সাপুড়ের পরামর্শ মেনে স্ত্রীকে রক্ষা করার অন্য পন্থা খুঁজে বের করেন তিনি। কী সেই উপায়, জানলে হাড়হিম হয়ে যাওয়ার জোগাড়। জ্যান্ত স্ত্রীকে গোবর চাপা দিলেন ওই ব্যক্তি। বিশ্বাস, এতেই দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে সাপের বিষ।
ঘটনা উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের। কাঠ সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের দেবেন্দ্রী। জঙ্গল থেকে ফেরার সময় সাপে কামড় দেয় তাঁকে। সেই অবস্থাতেই কোনওক্রমে বাড়ি ফিরে স্বামী মুকেশকে গোটা ঘটনাটি জানান মহিলা। দেরি না করে স্থানীয় এক সাপুড়েকে ডেকে পাঠান তাঁরা। সেই সাপুড়েই তখন দম্পতিকে পরামর্শ দেয়, গোবর দিয়ে দেবেন্দ্রীর গোটা শরীর চাপা দিলে বিষ বেরিয়ে যাবে। সাপুড়ের ‘মহান’ পরামর্শ শিরোধার্য করে নিজের স্ত্রীকে গোবরের নিচে চাপা দেওয়ার কাজ শুরু করেন মুকেশ। তাঁর এই কাণ্ড দেখতে বাড়ির সামনে ভিড় জমান স্থানীয়রাও। গোবরে ঢাকা দেবেন্দ্রীর শরীরের পাশে বসে লাগাতার মন্ত্র পড়তে থাকে ওই সাপুড়ে। কিন্তু কোনও মন্ত্রই কাজে লাগেনি। বিষ বের হওয়া তো দূর, শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করে ৭৫ মিনিট পরই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন মহিলা।
পাঁচ সন্তানের বাবা মুকেশ বলছেন, “স্ত্রীকে সাপে কামড় দেওয়ার পর প্রথমে ওকে পাউডারের মতো একটা ওষধু খাওয়াই। বিষ যাতে ছড়িয়ে না যায়, তার জন্য ওর হাত দড়ি দিয়ে বেঁধেও রেখেছিলাম। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। শেষমেশ সাপুড়ের পরামর্শেই গোবর চাপ দিলাম। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন সব ঠিক হয়ে যাবে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় স্ত্রীকে ওভাবে চাপা দিয়ে রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম ওষুধে কাজ হবে। কল্পনাও করতে পারিনি ও মারা যাবে।” এলাকার অতি জনপ্রিয় সাপুড়েও স্বীকার করেছে, শ্বাস আটকেই মৃত্যু হয়েছে মহিলার। তবে কাকোড় থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কুসংস্কারেই শেষ হয়ে গেল তরতাজা একটি জীবন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.