সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশ থেকে ‘ভিআইপি কালচার’-এর অবলুপ্তি ঘটাতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদি সরকার। নেতা-মন্ত্রীদের গাড়িতে লাল ব্যবহারে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু, বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক, সাংসদ, এমনকী, বিধান পরিষদের সদস্যদেরও যাতে ট্রাফিক জ্যামে পড়তে না হয়, তারজন্য জাতীয় সড়ক-সহ রাজ্যের সমস্ত টোল প্লাজাগুলিতে আলাদা লেন তৈরি করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যোগী সরকারের এই পদক্ষেপে বেজায় ক্ষুদ্ধ রাজ্যের আমলারা। তাঁদের দাবি, মুখে ‘ভিআইপি কালচার’ অবলুপ্ত করার কথা বলা হলেও, বাস্তবে উলটো পথেই হাঁটছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
[রাষ্ট্রপতি হয়ে প্রথমেই লাদাখে রামনাথ কোবিন্দ? রাজধানীতে জল্পনা]
লালবাতি লাগানো গাড়িতে চেপে যাচ্ছেন কোনও রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী কিংবা জনপ্রতিনিধি। তাই রাস্তা ফাঁকা রাখতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে অন্য সব গাড়িকে। আটকে পড়েছে অ্যাম্বুল্যান্সও। রাস্তায় বেরিয়ে এমন অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। কিন্তু, চেনা সেই ছবিটাই বদলে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ১ মে থেকে সারাদেশেই নেতা-মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের গাড়িতে লালবাতি ব্যবহারে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, লোকসভার স্পিকার ছাড়া আর কেউ গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করতে পারবেন না। এই প্রেক্ষাপটেই এবার খোদ বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে সাংসদ, বিধায়কদের জন্য হাইওয়ে-সহ রাজ্যের সমস্ত টোলপ্লাজায় আলাদা লেন তৈরির নির্দেশ দিল সে রাজ্যের সরকার। এমনকী, জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে টোল ফি-ও আদায় করা যাবে না। গত ১৫ জুলাই যোগী সরকারের এই নির্দেশের কথা জানিয়ে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। চিঠিতে বলা হয়েছে, হাইওয়ে-সহ রাজ্যের সমস্ত টোলপ্লাজায় যদি যানজট থাকে, তাহলে বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্য ও সাংসদের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাঁদের কাছ থেকে টোল ফি-ও নেওয়া যাবে না। উত্তরপ্রদেশের সরকারের আশা, এই নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা NHAI-ও।
[ক্যাগের রিপোর্টে হুঁশ ফিরল, উন্নত হচ্ছে রেলের খাবার]
যদিও যোগী সরকারের নির্দেশে মোটেই খুশি নন উত্তরপ্রদেশের আমলারা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই টোল ফি না দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিধায়করা। যোগী সরকার এই নির্দেশ জারি করে কার্যত সেই দাবিতেই সিলমোহর দিল। ফলে টোল প্লাজাগুলি সমস্যা আরও বাড়বে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, উত্তরপ্রদেশের সাংসদ বা বিধায়ক যখন লখনউ বা দিল্লি যান, তখন তাঁদের সঙ্গে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি গাড়ি থাকে। বিধায়ক বা সাংসদের টোল ফি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তাঁদের সঙ্গে থাকা অন্য গাড়িগুলিও টোল ফি দিতে চায় না। টোল প্লাজার কর্মীরা ফি চাইলে, নেতার অনুগামীরা অভব্য আচরণ করেন। ফলে আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হয়। প্রসঙ্গত, গত মে মাসেই উত্তরপ্রদেশের পিলভিটে ফি চাওয়ায় টোলপ্লাজার কর্মীদের মারধর করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক মহেন্দ্র যাদব ও তাঁর অনুগামীরা।
[এও এক ভারতবর্ষ, ১৭ বছর ধরে শিবলিঙ্গ গড়ছেন এই মুসলিম শিল্পী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.