সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষাক্ষেত্রেই নাকি চেতনার বিকাশ ঘটে। প্রাথমিক জ্ঞানের সঞ্চার ঘটে শিক্ষায়তনেই। বাড়ির পর এই স্থানই তাই শিশুদের কাছে মন্দিরসম। সমাজের তথাকথিত এই ধারণা এক ঝটকায় বদলে যাবে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির ঘটনাটি জানলে। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে সরকারি স্কুলের করুণ হাল দেখলে অবাক হতে হয়। যে স্থান পঠনপাঠনের, সেখানে গিয়ে নাকি ঝাড়ু দিতে হয় ছাত্রদের! শুধু তাই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং গোটা স্কুল কর্তৃপক্ষকে গ্রাস করেছে কুসংস্কারে। আর সেই কুসংস্কারই প্রাণ নিল এক খুদে ছাত্রর।
ঘটনা গত বুধবারের। ঝাঁসির একটি গ্রামের সরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অন্যান্য দিনের মতোই স্কুলে গিয়েছিল। সেখানেই তাকে মেঝেতে ঝাড়ু দিতে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ মেনে ঝাড়ু হাতে তুলে নেয় খুদে। কিন্তু স্কুলের এক প্রান্তে পড়ে থাকা কাঠির স্তূপ সরাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। তার এক সতীর্থ জানিয়েছে, ওই নোংরার স্তূপ পরিষ্কার করার সময়ই একটি বিছে তাকে কামড় দেয়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হলে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে বছর দশেকের সেই ছাত্রকে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তান্ত্রিক সেসময় বাড়িতে ছিলেন না। সেখান থেকেই তাঁকে ফোন করেন প্রধান শিক্ষক। ফোনের মধ্যেই ওই ছাত্রের কানে মন্ত্র পড়তে থাকেন তান্ত্রিক। এমন কুসংস্কারের কবলে পড়ে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে ওই খুদের। বেকায়দায় পড়ে শেষেমেশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ভরতির পরের দিনই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
গোটা ঘটনার জন্য প্রধান শিক্ষককেই দায়ী করেছে ছাত্রর পরিবার। একই অভিযোগে তাঁকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে ঝাঁসির প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিক। সেই সঙ্গে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতভম্ব এলাকাবাসী। শোকাহত খুদের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.