প্রীতিকা দত্ত: স্থানীয়দের বিশ্বাস, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলার বারনাওয়া গ্রামেই লুকিয়ে আছে মহাভারত যুগের সুড়ঙ্গ আর ধ্বংসাবশেষ। এতদিন যা শুধুই ছিল মানুষের বিশ্বাসে, এবার তা খতিয়ে দেখতে এগিয়ে এল খোদ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)।
মহাভারতের তথ্য বলছে, আজকের বারনাওয়া আসলে ইতিহাস প্রসিদ্ধ জনপদ বর্ণাবৎ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্বের অধ্যাপক রজত সান্যাল জানালেন ইতিহাসের এই বর্ণাবতের গল্প। তাঁর কথায়, “চোদ্দো বছরের অজ্ঞাতাবাস থেকে ফেরার পরে পাণ্ডবদের পাঁচটি গ্রাম দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কৌরবরা। তার মধ্যে চারটির নাম আমরা জানতে পারি। এই চারটি গ্রাম হল – আভিস্থল বা কুশস্থল, বৃকস্থল, মাকণ্ডী ও বর্ণাবৎ। মনে করা হয়, এই বর্ণাবত-ই আজকের উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলার বারনাওয়া (অপভ্রংশে)।” মহাভারতের উদ্যোগ পর্ব অনুযায়ী, এই বর্ণাবতেই ছিল একটি লাক্ষাগৃহ। যেখানে বসে মামা শকুনির পরামর্শে কৌরবেরা পাণ্ডবদের হত্যার ছক কষেছিলেন। অধ্যাপক সান্যালের কথায়, “এই বর্ণাবৎ নিঃসন্দেহে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী জনপদ ছিল।”
এএসআই-এর দু’টি কেন্দ্র এখন বারনাওয়া গ্রামে খননকাজে নেমেছে। দিল্লির দ্য ইনস্টিটিউট অফ আর্কিওলজি এবং এএসআই-এর খননকার্য শাখা। একটি দল ইতিমধ্যেই বারনাওয়া গ্রামে পৌঁছে কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইনস্টিটিউট অব আর্কিওলজি-র ডিরেক্টর সঞ্জয়কুমার মঞ্জুল ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে জানিয়েছেন, খননের কাজ এখন একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সময়ের সঙ্গে কাজ এগোলে তখনই কিছু বলা যাবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সুড়ঙ্গ এতই গভীর এবং লম্বা যে আগে কোনও পুরাতাত্ত্বিকই খননকাজ চালানোর সাহস দেখাননি। এই ধরনের ঐতিহাসিক জনপদ খননের পরে পুরাতাত্ত্বিকদের সাফল্য মেলে কতটা? অধ্যাপক সান্যাল বললেন, “এর আগেও এএসআই-এর উদ্যোগে ঐতিহাসিক জনপদে (যেমন, হস্তিনাপুর, অযোধ্যা) খননকাজ চলেছে। এবং খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শেষ থেকে প্রথম সহস্রাব্দ গোড়ার দিকের বেশ কিছু ধূসর চিত্রিত মৃৎপাত্র খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এগুলি সবই কিন্তু গাঙ্গেয় সংস্কৃতির প্রাচীনতম নিদর্শন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.