সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিলেন উত্তরপ্রদেশের মাংস বিক্রেতারা। বেআইনি কসাইখানা বন্ধের নামে তাঁদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। এই অভিযোগে রাজধানী লখনউ-সহ এলাহাবাদ ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে ধর্মঘট। শুধু মাংস বিক্রেতারা নন, ডিম ও মাছ বিক্রেতারাও যোগ দিয়েছেন তাতে।
ধর্মঘটের প্রসঙ্গে ‘বকরা গোস্ত ব্যাপার মণ্ডল’–এর কর্মকর্তা মুবেন কুরেশি বলেন, ‘সোমবার থেকেই আমরা ধর্মঘট শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। মাছ বিক্রেতারাও আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। সরকার কসাইখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।’ এদিকে, নয়ডার বাজারেও আদিত্যনাথের সিদ্ধান্তের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করেছেন সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এক ব্যবসায়ীর জানান, ‘উপযুক্ত নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও জোর করে অনেক মাংসের দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে প্রশাসন। এমনকী মুরগির মাংসের দোকানও খুলতে দেওয়া হচ্ছে না।’ আরেক ব্যবসায়ী জানান, ‘দোকানের সামনে পর্দা ঝোলাতে বাধ্য করা হচ্ছে। নতুন করে লাইসেন্স তৈরি বা পুরনো লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণও করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
তবে পুলিসের পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। গৌতম বুদ্ধ নগর থানার পুলিস সুপার সুজাতা সিংয়ের মতে, ‘নথিপত্র যাচাই করে দেখা পুলিসের দায়িত্ব। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অনেক দোকানদার নিজে থেকেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন।’ এদিকে, উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং পুলিশ আধিকারিকদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘পুলিশ যদি অকারণে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করে তাহলে সেটা মেনে নেওয়া হবে না।’ পাশাপাশি তাঁদের অতি উৎসাহিত হতেও মানা করেছেন। তবুও মাংস বিক্রেতাদের অভিযোগ বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের দোকান বন্ধ করতে বাধ্য করছে।
ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের একাধিক কসাইখানা বন্ধের ফরমান জারি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর যুক্তি ছিল কসাইখানাগুলি সম্পূর্ণ বেআইনি। যোগীর এই অভিযানের জেরে লখনউয়ের বিখ্যাত রেস্তোরাঁগুলি প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। গো মাংসের পরিবর্তে মুরগি ও খাসির মাংস দিয়েই কাবাব তৈরি করে কোনওমতে কাজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু এখন সেগুলিও বিপন্ন। ইতিমধ্যে মাংস না বিক্রি হওয়ায় দ্বিগুণ হতে চলেছে মাছের দাম। শুধু তাই নয়, দাম বাড়ছে অন্যান্য খাদ্য দ্রব্যেরও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.