সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”ওকে ছাড়া বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। অথচ কোয়ারান্টাইনের কারণে দেখাও করতে পারছি না।” এভাবেই প্রিয় পোষ্য বিরল প্রজাতির সারস (Sarus) থেকে দূরে সরে থাকা উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাসিন্দা ৩০ বছরের মহম্মদ আরিফকে কার্যতই ভেঙে পড়তে দেখা যাচ্ছে।
এই দু’জনের ‘বন্ধুত্বে’র খবর এখন গোটা দেশ জানে। গত ২১ মার্চ পাখিটিকে আরিফের কাছ থেকে নিয়ে যায় বন দপ্তর। পাখিটিকে নিজের কাছে রাখার জন্য আরিফ পড়েছেন বড়ই মুশকিলে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের তো হয়েছেই। দিতে হতে পারে বড় জরিমানাও। তবুও সেসবের মধ্যেই সারসটির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াই সবচেয়ে বেশি আঘাত দিচ্ছে আরিফকে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় পেশায় কৃষক আরিফ জানালেন, তিনি খবর পেয়েছেন পাখিটিও খাবার খেতে চাইছে না। এপ্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ”আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ও ভাল থাকবেই বা কী করে। ওকে বরং আমার ছবি দেখান তাহলে খেতে পারে। আমি ওকে ডাল, চাল ও অন্যান্য রান্না করা খাবার দিতাম। সেই ধরনের খাবার দিয়ে দেখুন। ও খাবে।”
তাঁর কাছে থাকার সময় সারস যে বন্দি ছিল না সেকথা মনে করিয়ে আরিফের মন্তব্য, ”ও আমার বন্ধু হয়ে উঠেছিল। নিজের ইচ্ছামতো আসত, যেত। বলা যায়, এখন ওকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।” তাঁর মতে, সারসটির তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়াটা সন্তানের তার অভিভাবকদের থেকে আলাদা হয়ে পড়ার মতোই।
এই বিষয়ে আরিফকে সমর্থন জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। তাঁর কটাক্ষ, ”যোগীজি (যোগী আদিত্যনাথ) যদি ওঁর পোষ্য কুকুর গুল্লুকে খাওয়াতে পারেন, তাহলে কেন সারসের জন্য আইন ব্যবহার করা হবে?”
উল্লেখ্য, গত বছরই খেত থেকে আহত সারসটিকে (Sarus Crane) উদ্ধার করেছিলেন আরিফ। তারপর পাখিটিকে শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন তিনি। সেই শুরু এক অভাবনীয় বন্ধুত্বের। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক ভিডিও। গোটা দেশ মুগ্ধ হয় মানুষ ও না-মানুষের মধ্যে তৈরি হওয়া বন্ধুত্ব দেখে। কিন্তু গত ২১ মার্চ পাখিটিকে আরিফের কাছ থেকে নিয়ে গিয়েছে বন দপ্তর। জানা গিয়েছে, আরিফের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সারসটি বিষণ্ণ হয়ে পড়েছে। প্রায় ৪০ ঘণ্টা সে কিছুই মুখে তোলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.