সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের জল নিগম (Jal Nigam) সংস্থায় কর্মরত কর্মী ও পেনশন ভোগীদের তিন মাসের বেতন বকেয়া। করোনার জেরে লকডাউনে দুই মাস ধরে বাড়িতে আটকে তাঁরা। আর করোনা যুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের সেই সংস্থাই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে। ফলে বিতর্কের মুখে সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা।
করোনা মোকাবিলায় একটি ত্রাণ তহবিল খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পিএম কেয়ার (PM CARE) নামে সেই ত্রান তহবিলে দেশের সকল মানুষই সামর্থ অনুযায়ী অনুদান দিয়েছেন। ২৭ এপ্রিল উত্তর প্রদেশের জল নিগম সংস্থার তরফ থেকে নগর উন্নয়ন মন্ত্রী আশুতোষ টন্ডনও ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা দান করেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাতে সেই টাকা তুলে দেওয়া হয়। এই বিপুল পরিমাণে অর্থ রাজ্যের জল নিগম সংস্থায় কর্মরত সকল কর্মী ও পেনশন ভোগী ব্যক্তিদের একদিনের বেতনের সমান বলেই জানা যায়। অপরদিকে, দীর্ঘ তিন মাস ধরে এই সংস্থার কর্মী ও পেনশন ভোগীদের বেতনও বকেয়া রয়েছে সূত্রের খবর। একটি বেসরকারি সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দেওয়া সময় সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও সংস্থার মুখপাত্র ডিপি মিশ্রা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন ও রাজ্য সরকারের এই কাজের বিরুদ্ধে সওয়াল করেন। তাঁর মতে, “করোনা মোকাবিলায় ত্রাণ তহবিলে জল নিগম সংস্থার তরফ থেকে অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। সেই বিষয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। তবে পি এম কেয়ারে অর্থ সাহায্য করার পূর্বে আমাদের একবারও সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়নি। সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়, জল নিগম সংস্থা অর্থ সংকটের মধ্যে রয়েছে। তাই বেতন দিতে দেরি হবে। বিগত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই সংস্থার কর্মী ও পেনশনভোগীরা বেতন পাচ্ছেন না। আমার প্রশ্ন সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্য অর্থ থাকলে কর্মীদের ও পেনশন ভোগীদের এতদিন বেতন দেওয়া হল না কেন?” এই সংস্থা এখনও কর্মীদের ও পেনশন ভোগীদের বাকি খাতগুলির টাকাও দেয়নি। প্রতি মাসে সংস্থার কর্মী-সহ পেনশনভোগীদের বেতনে সরকারের ৭৩ কোটি টাকা খরচ হয় বলে জানান ডিপি মিশ্রা।
বেতন তো দূরে থাক, বিগত কয়েক বছর ধরে এই সংস্থার কর্মীদের কোনও বোনাস দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন সংস্থার মুখপাত্র। সরকারের কাছে বারংবার বেতনের বিষয়ে প্রশ্ন করলেই সেই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি বলেই কর্মীরা বিরক্তি প্রকাশ করেন। অন্যদিকে কর্মীদের অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা যুক্তি দেন জল নিগম সংস্থার এম ডি বিকাশ গোঠালওয়াল। তিনি জানান, “ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মীদের বকেয়া বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে তাঁরা অতিরিক্ত কাজের জন্য কমিশনও পাবেন। শুধুমাত্র লকডাউনের জন্যই এই সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত কর্মীদের সকল অভাব-অভিযোগ মিটিয়ে দেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.