সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় পা কাটা গেল এক ব্যক্তির। আর সেই পায়ের টুকরোই কিনা হাসপাতালের বিছানায় বালিশ হিসেবে কাজে লাগানো হল! শুনলে গা শিউরে ওঠে। হতবাক হতে হয়। কিন্তু শনিবার উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির সরকারি হাসপাতালে এমনই অমানবিক, নৃশংস দৃশ্য চোখে পড়ল। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
যোগীর রাজ্যে হাসপাতালের দুর্দশা ও চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে ইদানীং একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর গোরক্ষপুরে অক্সিজেনের অভাবে বহু শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল। আর এবার মহারানি লক্ষ্মীবাই ঝাঁসি হাসপাতাল যে দৃশ্য প্রত্যক্ষ করল, তা যেন কল্পনাও করা যায় না। এমার্জেন্সি বিভাগে ভরতি রোগীর মাথায় বালিশের পরিবর্তে রাখা হল তাঁরই কাটা যাওয়া পা। যে খবরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনা শনিবার দুপুরের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল ২৮ বছরের ঘনশ্যামকে। তিনি পেশায় স্কুল বাসের খালাসি। পুলিশ জানাচ্ছে, ঝাঁসির থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে মৌরানিপুর এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি। ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে গিয়েই ঘটে দুর্ঘটনা। বেশ কয়েকজন খুদে স্কুল পড়ুয়াও দুর্ঘটনায় আহত হয়। সেখানেই নিজের বাঁ-পায়ের নিচের অংশ খোয়ান ঘনশ্যাম। ঘনশ্যামকে হাসপাতালে ভরতি করেন তাঁর মা-ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়রা। তাঁরা জানান, চিকিৎসার পর ঘনশ্যামের বাড়ি থেকে আনা একটি বালিশ তাঁর পায়ের নিচে রাখে দায়িত্বে থাকা হাসপাতালকর্মীরা। আর মাথায় দেওয়া হয় কাটা যাওয়া পায়ের টুকরোটি। এমন দৃশ্য দেখে পরিবারই আরেকটি বালিশের জোগাড় করে। তারপরই কাটা পা সরিয়ে দেয় কর্মীরা।
#UttarPradesh: Attendants of a patient allege that staff at Maharani Laxmi Bai Medical College, Jhansi used his severed leg as a pillow for him after he was admitted there upon meeting with an accident, College Principal says ‘We’ve set up committee to probe & will take action’. pic.twitter.com/lJFJ3SCjWf
— ANI UP (@ANINewsUP) March 10, 2018
মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ডক্টর সাধনা কৌশিক জানাচ্ছেন, “আমি এমার্জেন্সি ওয়ার্ডের প্রায় ৩০ জনের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু কে এমন নক্কারজনক কাণ্ড করেছে, কেউই বলতে পারেননি। তাই যে এমন দায়িত্বহীনের মতো কাজ করেছে তাকে খুঁজে বের করতে একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হবে। তদন্ত কমিটির প্রধান ডক্টর রাজীব সিনহাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। তারপরই দোষীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তবে ইতিমধ্যেই এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত মেডিক্যাল আধিকারিক, নার্স-সহ বেশ কয়েকজন কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে প্রিন্সিপল জানান, ওই রোগীর দেখভালের দায়িত্বে যে মহিলা কর্মী ছিলেন, এ হয়তো তাঁরই কাজ। তবে যোগীর রাজ্যে এমন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.