সন্তানহারা পিতা ইয়াকুব মনসুরি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক হাত দূরে আগুনে পুড়ছে নিজের যমজ সন্তান। অথচ তাঁদের বাঁচানোর কোনও উপায় নেই। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে নিজের সন্তানদের আশা ত্যাগ করে বাকিদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ইয়াকুব মনসুরি। চোখের জল গিলে কার্যত যমের দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছেন ৭ সদ্যোজাতকে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আগুন লেগেছিল ঝাঁসির ওই হাসপাতালের এনআইসিইউতে। ঘটনার সময় সেখানে ঘুমোচ্ছিল শিশুরা। ওই ওয়ার্ডেই সন্তানদের ঘুম পাড়িয়ে বাইরে বেরিয়েছিলেন ইয়াকুব মনসুরি। হঠাৎ সেখানে আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান ইয়াকুব। কিন্তু ততক্ষণে সেখানে আগুন ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আগুন ও ধোঁয়ার দাপটে ওয়ার্ডে ঢুকতেই পারেননি তিনি। পরে অন্য ওয়ার্ডের জানালার কাচ ভেঙে কোনও মতে ভেতর থেকে উদ্ধার করেন ৭ শিশুকে। বাকিদের উদ্ধার করেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। দীর্ঘক্ষণ পর যখন সেখানে দমকল এসে পৌঁছয় ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ১০ শিশুর। ইয়াকুব জানান, অগ্নিকান্ডের জেরে তাঁর যমজ কন্যা সন্তানেরও মৃত্যু হয়।
ভয়াবহ সেই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইয়াকুব বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেও শিশুদের উদ্ধার করতে পারিনি। ভিতরে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছিল না কেউ। আগুনের দাপট এতটাই ছিল যে ভিতরে যাওয়া কার্যত অসম্ভব ছিল। সবাই চেষ্টা করছিল নিজের সন্তানদের বাঁচাতে। কিন্তু কোনও আশা না থাকায় বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা করি আমরা।’ কান্না ধরা গলায় ইয়াকুব বলেন, ‘আমার দুই কন্যা সন্তান ছিল ওদেরকে বাঁচাতে পারিনি। এতগুলি শিশুর মৃত্যু হল, এর বিচার চাই।’
এদিকে শুক্রবারের মর্মান্তিক সেই ঘটনার তদন্তে জানা গিয়েছে, মুলত শট সার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে অক্সিজেনের সিলিন্ডার থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ আকার নেয়। এদিকে এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, আগুন নেভানোর যে যন্ত্র হাসপাতালে ছিল ৪ বছর আগে তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.