কিংশুক প্রামাণিক, বারাণসী: উত্তরপ্রদেশের ফল বিজেপি কি বুঝতে পারছে? ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে কোন সমীকরণ বাধা অখিলেশের! দুপক্ষই ধাঁধায়। এমন পরিস্থিতিতে সপ্তম তথা শেষ পর্বে প্রচার শেষে ঝড় ভরকেন্দ্র বারাণসীতে। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। আচার্য যোগীনাথকে বাঁচাতে যেমন আসরে মোদি (Narendra Modi), তেমনই চাপের মুখে অখিলেশ যাদবকে কার্যত অক্সিজেন দিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দিলেন কিছু টিপস।
১০ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রথম পর্ব। পরশু ৭ মার্চ শেষ দফা। কৌতূহলের শেষ বিন্দুতে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্যের ভোট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ৫৪টি আসনে যে বেশি পাবে সেই নিশ্চিত। এমনকী, এই পর্বের রায়ে লখনউয়ের তখত দখলের ফয়সালা ফোটো ফিনিশেও হতে পারে। ৪০৩ আসনের বিধানসভা ভোটে গণনা ১০ই। বিজেপি (BJP) বাংলার কায়দায় এখানে সর্বশক্তি নিয়ে নেমেছে। মোদি-শাহরা (Amit Shah) ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। বেহাল পরিস্থিতি অনেকটা মেরামতের চেষ্টা হয়েছে সেই হিন্দুত্ব ইস্যু সামনে রেখে।
কাশীর মন্দিরের ভোলবদল থেকে অয্যোধ্যায় রাম মন্দির (Ram Mandir) নির্মাণ রোখার চেষ্টা হয়েছে কৃষক দলিত গরিব মানুষের ক্ষোভ। অন্যদিকে প্রচারের শেষ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উপস্থিতিতে অখিলেশের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে। মমতা তাঁকে বলেছেন, কোনও ঢিলেমির জায়গা নেই। তাঁর বিশ্বাস বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রে এসে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে অখিলেশ (Akhilesh Yadav) খুশি। শেষ যুদ্ধে নামার আগে দিদির আশীর্বাদ নিয়েছেন। মমতা তাঁকে ও সমাজবাদী (Samajwadi Party) নেতৃত্বকে বুঝিয়েছেন, প্রতিকূলতার মধ্যে বাংলায় তিনি কীভাবে শেষ দিন পর্যন্ত লড়েছিলেন। জনতার মাঝে বল ছুড়ে বাংলায় বিধানসভা ভোটের প্রচার মাত করেছিলেন মমতা। অখিলেশের সভা থেকে সেই দৃশ্য আবার দেখা গেল।
বল ছোড়ার ছবি শুক্রবার বিভিন্ন স্থানীয় কাগজ গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে। এদিন সারনাথ গিয়ে দেখলাম সেই ছবি ও খেলা হবে স্লোগান নিয়ে চর্চা হচ্ছে। বিষয়টি যে বিজেপিকে ভাবিয়েছে সেটা বোঝা গেল এদিন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ভাষণেও। অখিলেশ জমানার গুন্ডাগর্দির অভিযোগ ফের সামনে এনে তিনি বলেছেন, “আপনারা কি সেই খেলা ফেরত আনতে চান।” বারাণসীতে এসেই পথে বাধা, অভব্যতা করে বিজেপি বুঝিয়ে দিয়েছিল মমতার উপস্থিতি তারা ভালভাবে নিচ্ছে না। এদিন মোদির ভাষণেও সেটা স্পষ্ট। মমতা দুপুরে কলকাতা ফিরতেই বারাণসীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে গেরুয়া বাহিনী। মোদির রোড শো-কে সফল করতে নামেন স্থানীয় নেতারা। বিকেলে কলকাতা ফেরার আগে এয়ারপোর্টে রাহুল (Rahul Gandhi) ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দেখলাম। নির্বাচনী প্রচার করে তাঁরা ফিরলেন। যদিও বারাণসীতে এই তিনদিন কংগ্রেসের একটিও ফ্ল্যাগ দেখিনি। রাহুল দ্রুত এগিয়ে গেলেও প্রিয়াঙ্কা দাঁড়ালেন। পরিচয় দিতে হেসে কথা বললেন। জনতার সঙ্গে ছবি তুললেন। সেলফিতে পোজ দিলেন। জয়বাবা বিশ্বনাথভূমে শেষবেলায় বুঝলাম ভাই বোনে ফারাকটা ঠিক কোথায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.