সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বোলি সে নেহি তো গোলি সে’। এর মানে হচ্ছে ‘কথায় না হলে, গুলিতে হবে’। মাফিয়া থেকে পুলিশ, উত্তরপ্রদেশে উভয়েই এই ‘বেদবাক্য’টি মেনে চলে। অভিযোগ, এবার সমাজবাদী আমলে ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে খাড়া করতে তুলতে ‘গুলি’তেই ভরসা রাখছে যোগীর পুলিশ।
[মিষ্টি কিনতে গিয়ে বাসের নিচে, ২ যুবকের মৃত্যুতে ফুঁসছে রবীন্দ্রনগর]
জানা গিয়েছে, গত ৪৮ ঘন্টায় ১৮টি এনকাউন্টার করেছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। ক্ষমতায় এসেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তারপরই মাফিয়া ও কুখ্যাত সমাজবিরোধীদের একটি ‘হিটলিস্ট’ তৈরি করে পুলিশ। সেই মতো গত দু’দিনে কনৌজ, মুজফ্ফরনগর, গোরক্ষপুর-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দেয় ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’। এমনই এক এনকাউন্টারে মুজফ্ফরনগরে খতম হয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার ইন্দ্রপাল। খুন-জখমের মতো তেত্রিশটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ছিল সে। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডে এক পুলিশকর্মীর হত্যায় জড়িত ছিল গাজিয়াবাদের বাসিন্দা ইন্দ্রপাল। এছাড়াও শনিবার ভোররাতে কনৌজ জেলায় সমাজবিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে আহত হয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। রাজ্য জুড়ে চলা অভিযানে এপর্যন্ত ২৫জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগ, সমাজবাদী আমলে উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনা হু হু করে বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিকেয় ওঠে মহিলাদের নিরাপত্তা। বিধানসভা নির্বাচনে নারীসুরক্ষাকেই তৎকালীন শাসক দলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছিলেন যোগী। লখনউয়ের মসনদ দখল করে তাই ‘রোমিও স্কোয়াড’-সহ একাধিক পদক্ষেপ করেন তিনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ সালে সব মিলিয়ে ৯৫০টি এনকাউন্টার করে পুলিশ। নিকেশ করা হয় প্রায় ৩০ জন কুখ্যাত অপরাধীকে। পুলিশের এহেন পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসরে নামে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। নোটিস পাঠানো হয় রাজ্য পুলিশকে।
[লজ্জা! ‘পদ্মাবত’ দেখতে গিয়ে হলের মধ্যেই ধর্ষিতা যুবতী]
এদিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ওপি সিং। তিনি বলেন, অপরাধীদের পাকড়াও করতে গেলে গুলি-গোলা চলবেই। একমাত্র আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশকে বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে হয়। মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার সাফ জানিয়ে দেয়, এনকাউন্টারগুলি বৈধ। অপরাধীদের ধরতে সমস্ত নিয়ম মেনেই অভিযানগুলি চালানো হয়েছে। এমনকি প্রতিটি এনকাউন্টারের পর বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হয়। তবে এই যুক্তি মেনে নিতে পারছেন না ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, অপরাধ দমনের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে পুলিশ। শুধু তাই নয় বিরোধী দলের ‘বাহুবলী’দের নিকেশ করতেই এই পন্থা নিয়েছে সরকার বলেও অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.