নয়াদিল্লি : ফের কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থায় এককাট্টা বিরোধীরা। কেন্দ্রবিরোধী স্লোগানে সপ্তাহের প্রথম দিনেই উত্তাল সংসদ। ‘আমরা সুবিচার চাই’, স্লোগানে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ। এদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সায় দিলেন রামবিলাস পাসোয়ান। বিজেপিবিরোধী জোট আরও খানিকটা অক্সিজেন পেল। বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। ফলে সোমবারেও অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা গেল না। প্রথমে সংসদ সেক্রেটারিয়েটে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের তরফে একটি ও তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) তরফে দু’টি অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা পড়ে। প্রশ্নোত্তর পর্বের পর ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং টিডিপির তরফে এদিন ফের লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ছিল। কিন্তু অধিবেশন মুলতুবি হওয়ায় পেশ করা যায়নি প্রস্তাব। অনাস্থা প্রস্তাবের সমর্থনে এককাট্টা কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম দল, এসপি, আরজেডি ও ওড়িশার বিজেডি।
[ পদ্ম হটাতে বদ্ধপরিকর শিব সেনা, মোদি মুক্ত ভারত গড়ার ডাক রাজ ঠাকরের ]
প্রবল হট্টগোলে এদিন সংসদের দুই কক্ষেরই অধিবেশন ব্যাহত হয়। রাজ্যসভার অধিবেশন এআইডিএমকে ও টিডিপি-র সাংসদদের হট্টগোলের জেরে এদিনের মতো মুলতুবি ঘোষণা করা হয়। লোকসভায় বিরোধীদের হট্টগোলের কারণে অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন প্রথমে বেলা ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি রাখার কথা ঘোষণা করেন। ফের শুরু হয় অধিবেশন। ওয়াইএসআর, টিআরএস, টিডিপি সাংসদরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। আসনে বসে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকেন অন্যান্য বিরোধীরাও। এরপরই অধ্যক্ষ এদিনের মতো লোকসভার অধিবেশন মুলতুবির কথা ঘোষণা করেন।
সরকারের বিরুদ্ধে পাসোয়ানের অনাস্থা ঘোষণার পর সরকারের উপর চাপ বাড়ছে, এই জাতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, ২০১৯ সালের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। প্রত্যেক সাংসদকে সংসদের নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসতে চান তাঁরা।
[ আর্থিক অনটনেও লড়ব, রাওয়াতের কথায় উজ্জীবিত সেনা ]
বিজেপি জোটসঙ্গী লোক জনশক্তি পার্টি প্রধান ও কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের বক্তব্য, সংখ্যালঘু, দলিতরা বিজেপিতে অপাংক্তেয় বলে মানুষের যে ধারণা, তা বদলাতে বিজেপির জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। রামবিলাসের অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন কেন্দ্রবিরোধী শক্তিগুলিকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। জম্মু কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের তরফে ফারুক আবদুল্লা বলেন, বিরোধী শক্তি হিসাবে অনাস্থা প্রস্তাবে সায় দেবেন তাঁরা। হরিয়ানায় একসঙ্গে লড়াই করার কথা জানাল জোটসঙ্গী অকালি দলও।
[ কুমেরুতে ৪০৩ দিন কাটিয়ে নয়া নজির ইসরোর এই মহিলা বিজ্ঞানীর ]
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এটাই বিপক্ষের প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব। বিজেপির বহুদিনের সঙ্গী শিব সেনা অনাস্থা নিয়ে কোনও মত ব্যক্ত না করলেও দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এদিন বিকেলে দলের চূড়ান্ত বৈঠক ডেকেছেন। দলের সব বিধায়ক, সাংসদকে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে অনাস্থা প্রস্তাবে শিবসেনার অবস্থান। আদৌ শিবসেনা বিজেপির সঙ্গত্যাগ করবে কি না, তা স্পষ্ট হবে এদিনের বৈঠকের পর। প্রসঙ্গত, রবিবারের একটি সভায় মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে মোদি-মুক্ত ভারতের ডাক দিলেন। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে দলীয় জনসভায় তিনি বলেছেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে এনডিএ-কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মোদি-মুক্ত ভারত গড়ে তোলার জন্য সব বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়া উচিত।
[ এই সম্প্রদায়ে কন্যাসন্তান জন্মালে মায়ের খাতির বাড়ে! কারণ জানলে চমকে উঠবেন ]
অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার অনুরোধ কেন্দ্র খারিজ করে দেওয়াতেই ওয়াইএসআর কংগ্রেসের তরফে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। গত শুক্রবার ওয়াইএসআরের তরফে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন জানায় টিডিপি। টুইট করে এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.