সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যিনি লিখতে এবং পড়তে পারেন তাকে সাক্ষর বলা হয়। এই মাপকাঠিতে দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ সাক্ষর। দেশের এক চতুর্থাংশ মানুষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিরক্ষর। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এই প্রেক্ষিতে আশার কথা শোনালেন। তাঁর বক্তব্য, ২০২২ সালের পর দেশে আর কেউ নিরক্ষর থাকবেন না। সেই লক্ষ্যেই সরকার এগোচ্ছে।
বিশাল জনসংখ্যা। তবে এই বিপুল মানবসম্পদকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে না পারা ভারতের অগ্রগতির অন্যতম বাধা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশে এখনও ২৬ শতাংশ মানুষ নিজের নাম লিখতে বা পড়তে পারেন না। লজ্জার এই তথ্য বদলাতে কেন্দ্র সরকার বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের ধারণা, ১০০ শতাংশ স্বাক্ষরতা অসম্ভব কিছু নয়। দেশ যেভাবে এগোচ্ছে তাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আর কেউ নিরক্ষর থাকবেন না। তাঁর বক্তব্য, এই নতুন ভারতে সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের মধ্যে মানের লড়াই হবে। রাজস্থান সরকারের এক শিক্ষাবিষয়ক অনুষ্ঠানে গিয়ে এমন আশার কথা শোনান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। স্বাধীনতার সময় দেশের স্বাক্ষরতা হার ছিল মাত্র ১৮ শতাংশ। সত্তর বছর পর তা ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে। সরকারের লক্ষ্য ১০০ শতাংশ সাক্ষরতা।
নিরক্ষরতা দূরীকরণে জাভড়েকর জানান, ছোটদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের অনেকেই নতুন প্রজন্মের পড়ুয়া। তারা যদি উদ্যোগ নিয়ে অভিভাবকদের অজ্ঞানতার অন্ধকার কাটায় তাহলে দেশের পক্ষে মঙ্গল। এর জন্য শিক্ষা দপ্তরও কচিকাঁচাদের পাশে থাকবে। বাচ্চারা কীভাবে তাদের বাবা, দাদুদের শেখাবে তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর মতে পড়াশোনাটা নতুন প্রজন্মের কাছে উপভোগ্য করে তুলতে হবে। তাহলেই স্কুলছুট আটকানো যাবে। এবিষয়ে রাজস্থান সরকারের তিনি প্রশংসা করেন। মরু রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি ঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে মনে করেন জাভড়কের। নিরক্ষরতা মুক্ত করতে দেশে পাঁচ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকের পদ পূরণ করা হবে। প্রতিটি রাজ্যকে এই ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস পালন করা হয়। জাভড়করের ইঙ্গিত ২০২৩ সাল নাগাদ এধরনের অনুষ্ঠানের প্রাসঙ্গিকতা পাবে। ২০১১-র গণনায় ভারতে সাক্ষরতার হার ছিল ৭৪ শতাংশ। সবথেকে শিক্ষিত রাজ্য কেরল। এই রাজ্যের প্রায় ৯৪ শতাংশ মানুষ সাক্ষর। তারপরই লাক্ষাদ্বীপ, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা। সবার শেষে বিহার। তবে তিন বছরের মধ্যে দেশের সাক্ষরতার হার প্রায় ৮০ শতাংশে পৌঁছে যায়। তিন বছরের মধ্যে বৃদ্ধি হয় ১০ শতাংশ। এই গতি দেখে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর আশা ২০২২ সালের মধ্যে হবে অসাধ্যসাধন। তবে দুনিয়ার সবথেকে বেশি নিরক্ষরের বাস এই ভারতেই। এবছরের জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গে ১২ লক্ষ পড়ুয়াকে সাক্ষরতা অভিযানে নামানো হয়েছে। এভাবে বিন্দু বিন্দু থেকে পাঁচ বছরের সিন্ধু হওয়ার স্বপ্ন দেখছে ভারতবর্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.